সমস্ত “খ্রিস্টান” কি প্রকৃত খ্রিস্টান?
সমস্ত “খ্রিস্টান” কি প্রকৃত খ্রিস্টান?
সারা পৃথিবীতে কত জন খ্রিস্টান আছে? অ্যাটলাস অভ্ গ্লোবাল ক্রিসচিয়ানিটি নামে এক বই অনুযায়ী ২০১০ সালে সারা পৃথিবীতে প্রায় ২৩০ কোটি খ্রিস্টান ছিল। সেই বই অনুযায়ী সেই সমস্ত খ্রিস্টানদের মধ্যে ৪১,০০০-রেরও বেশি সম্প্রদায় রয়েছে আর তাদের নিজের নিজের শিক্ষা ও রীতিনীতি রয়েছে। “খ্রিস্ট” ধর্মের মধ্যেও যে এত ধরনের সম্প্রদায় রয়েছে, তা দেখে অনেকেই ঠিক করতে পারে না, তারা কোনটাতে বিশ্বাস করবে আর এমনকী তারা হতাশ হয়ে পড়ে। তাদের মনে হয়তো এই প্রশ্ন আসতে পারে: ‘যারা নিজেদের খ্রিস্টান বলে দাবি করে, তারা সবাই কি প্রকৃত খ্রিস্টান?’
এই বিষয়টা বোঝার জন্য একটা উদাহরণ লক্ষ করুন। একজন ব্যক্তি যদি অন্য দেশে যেতে চান, তা হলে তাকে তার পরিচয় দিতে হবে। তিনি কে, তা প্রমাণিত করার জন্য শুধু মুখের কথায় নয়, বরং তাকে পরিচয়পত্রও দেখাতে হবে, যেমন পাসপোর্ট। একইভাবে, কোনো ব্যক্তি খ্রিস্টের উপর বিশ্বাস করেন বলে দাবি করলেই তিনি একজন খ্রিস্টান হয়ে যাবেন, এমনটা নয়। এরজন্য, তাকে আরও অন্যান্য প্রমাণ দিতে হবে। সেগুলো কী?
“খ্রিস্টান” শব্দটা যিশুর মৃত্যুর প্রায় ১০ বছর পর ব্যবহার করা শুরু হয়। এই বিষয়ে বাইবেলের একজন লেখক লূক এভাবে লিখেছেন: “এই আন্তিয়খিয়াতেই প্রথমে ঈশ্বরের নির্দেশনায় শিষ্যদের খ্রিস্টান বলে ডাকা হয়।” (প্রেরিত ১১:২৬) লক্ষ করুন, যিশু খ্রিস্টের শিষ্যদেরই খ্রিস্টান বলা হয়। যদি কেউ যিশু খ্রিস্টের শিষ্য হতে চায়, তা হলে তাকে কী করতে হবে? দ্যা নিউ ইন্টারন্যাশনাল ডিকশনারি অভ্ নিউ টেস্টামেন্ট থিওলজি নামে এক বই বলে: “যিশুর শিষ্য হিসেবে তাঁকে অনুসরণ করার অর্থ হল, বিনা শর্তে নিজের সম্পূর্ণ জীবন উৎসর্গ করা ... সারাজীবন ধরে আত্মত্যাগ করে চলা।” তাই, যে-ব্যক্তি সত্য খ্রিস্ট ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা যিশুর শিক্ষা ও নির্দেশনা বিনা শর্তে পুরোপুরিভাবে পালন করেন, তিনিই একজন প্রকৃত খ্রিস্টান।
বর্তমানেও কি এমন লোকেরা রয়েছে, যারা সত্যিই খ্রিস্টকে অনুসরণ করে চলে? এই বিষয়ে যিশু নিজে কী বলেছিলেন? বাইবেলে এই দুই প্রশ্নেরই উত্তর রয়েছে। তাহলে আসুন, আমরা এর পরের পাঁচটা প্রবন্ধে যিশুর বলা কথাগুলো নিয়ে পরীক্ষা করে দেখি। সেগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারব যে, প্রকৃত খ্রিস্টান কারা। আমরা এও লক্ষ করব যে, প্রথম শতাব্দীতে কীভাবে যিশুর শিষ্যেরা নিজেদের প্রকৃত খ্রিস্টান বলে প্রমাণিত করেছিল। এ ছাড়া, আমরা লক্ষ করব, কারা বর্তমানে নিজেদের প্রকৃত খ্রিস্টান বলে প্রমাণিত করছে।