অধ্যায় ছয়
আপনার কিশোর বয়সি সন্তানকে উন্নতি করতে সাহায্য করুন
১, ২. কিশোর বয়স কোন কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও আনন্দ নিয়ে আসতে পারে?
ঘরের মধ্যে পাঁচ বছর অথবা এমনকি দশ বছরের একটা সন্তান থাকা আর কিশোর বয়সি একটা সন্তান থাকা একেবারে আলাদা বিষয়। কিশোর বয়সটা অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সমস্যা নিয়ে আসে ঠিকই কিন্তু তা আনন্দ এবং পুরস্কারও নিয়ে আসতে পারে। যোষেফ, দায়ূদ, যোশিয় এবং তীমথিয়ের মতো উদাহরণগুলো দেখায় যে, অল্পবয়সিরা দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করতে এবং যিহোবার সঙ্গে এক উত্তম সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে। (আদিপুস্তক ৩৭:২-১১; ১ শমূয়েল ১৬:১১-১৩; ২ রাজাবলি ২২:৩-৭; প্রেরিত ১৬:১, ২) আজকে, অনেক কিশোর-কিশোরীও একই বিষয়ের প্রমাণ দেয়। সম্ভবত আপনি তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে চেনেন।
২ তবে, কারো কারো জন্য কিশোর বয়সটা অশান্ত এক সময় হয়ে থাকে। বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে-মেয়েদের মেজাজ হয়তো একসময় ভাল থাকে, আবার খারাপ যায়। কিশোর বয়সি ছেলে-মেয়েরা হয়তো আরও বেশি স্বাধীন হতে চায় আর বাবা-মায়েরা তাদের ওপর যে-সীমা আরোপ করে, তাতে হয়তো অসন্তুষ্ট হয়ে থাকে। তা সত্ত্বেও, এই ধরনের অল্পবয়সিরা অনেক অনভিজ্ঞ এবং বাবা-মায়ের কাছ থেকে তাদের প্রেমময় ও ধৈর্যশীল সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। হ্যাঁ, কিশোর বয়সটা রোমাঞ্চকর হতে পারে কিন্তু তা আবার বিভ্রান্তিকরও হতে পারে—বাবা-মা ও কিশোর-কিশোরী উভয়ের জন্যই। এই বছরগুলোতে, অল্পবয়সিদের কীভাবে সাহায্য করা যেতে পারে?
৩. কোন উপায়ে বাবা-মায়েরা তাদের বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে-মেয়েদেরকে জীবনে এক উত্তম সুযোগ প্রদান করতে পারে?
৩ যে-বাবা-মায়েরা বাইবেলের পরামর্শ অনুসরণ করে, তারা তাদের বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে-মেয়েদেরকে দায়িত্ববান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পথে আসা পরীক্ষাগুলোর মধ্যে সফলভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সম্ভাব্য সর্বোত্তম সুযোগ প্রদান করে। সমস্ত দেশে এবং সর্বকালে যে-বাবা-মা ও কিশোর-কিশোরীরা বাইবেলের নীতিগুলো একত্রে কাজে লাগিয়েছে, তারা সফল হয়েছে।—গীতসংহিতা ১১৯:১.
অকপট ও খোলাখুলি ভাববিনিময়
৪. কেন বিশেষ করে কিশোর বয়সে ব্যক্তিগত পরামর্শ গুরুত্বপূর্ণ?
৪ বাইবেল বলে: “মন্ত্রণার অভাবে সঙ্কল্প সকল ব্যর্থ হয়।” (হিতোপদেশ ১৫:২২) সন্তানরা যখন ছোটো থাকে, তখন যদি মন্ত্রণা বা ব্যক্তিগত পরামর্শের প্রয়োজন হয়ে থাকে, তাহলে তা বিশেষ করে কিশোর বয়সে—যখন অল্পবয়সিরা সম্ভবত ঘরে কম সময় কাটায় এবং স্কুলের বন্ধুবান্ধব ও অন্যান্য সঙ্গীর সঙ্গে বেশি সময় কাটায়, সেই সময়ে—অতীব গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনো ব্যক্তিগত পরামর্শ করা না হয়—সন্তান ও বাবা-মায়ের মধ্যে যদি কোনো অকপট ও খোলাখুলি ভাববিনিময় না হয়—তাহলে কিশোর-কিশোরীরা ঘরে অপরিচিত ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারে। অতএব, কীভাবে ভাববিনিময়ের পথ খোলা রাখা যেতে পারে?
৫. বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাববিনিময় করার বিষয়টাকে কিশোর-কিশোরীদের কীভাবে দেখতে উৎসাহিত করা হয়?
৫ এই ক্ষেত্রে কিশোর-কিশোরী ও বাবা-মা উভয়কে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে হবে। এটা ঠিক যে, বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে-মেয়েরা হয়তো ছোটোবেলার চেয়ে বরং এখন বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলাকে আরও কঠিন বলে মনে করতে পারে। তা সত্ত্বেও, মনে রাখবেন যে, “উপযুক্ত পরিচালনার অভাবে জাতি হেরে যায়, কিন্তু অনেক পরামর্শদাতা হলে জাতি উদ্ধার পায়।” (হিতোপদেশ ১১:১৪, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) এই কথাগুলো ছোটো-বড় সবার বেলায় সমভাবে প্রযোজ্য। যে-কিশোর-কিশোরীরা এই বিষয়টা উপলব্ধি করে, তারা বুঝতে পারবে যে, তাদের এখনও উপযুক্ত বা দক্ষতাপূর্ণ নির্দেশনার প্রয়োজন, যেহেতু তারা আগের চেয়ে আরও বেশি জটিল বিষয়গুলোর মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের স্বীকার করা উচিত যে, তাদের বিশ্বাসী বাবা-মায়েরা পরামর্শদাতা হিসেবে সুযোগ্য কারণ জীবন সম্বন্ধে তারা আরও বেশি অভিজ্ঞ এবং বহু বছর ধরে তারা তাদের প্রেমময় চিন্তার প্রমাণ দিয়েছে। তাই, বিজ্ঞ কিশোর-কিশোরীরা তাদের জীবনের এই পর্যায়ে তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে দূরে সরে যাবে না।
৬. কিশোর বয়সি সন্তানদের সঙ্গে ভাববিনিময় করার বিষয়ে বিজ্ঞ ও প্রেমময় বাবা-মায়েরা কোন মনোভাব বজায় রাখবেন?
৬ খোলাখুলি ভাববিনিময় করার অর্থ হল, কিশোর-কিশোরীরা যখন কথা বলার প্রয়োজন বোধ করবে, তখন বাবা-মায়েরা সময় দেওয়ার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করবে। আপনি যদি একজন বাবা অথবা মা হয়ে থাকেন, তাহলে এটা নিশ্চিত করুন যে, অন্তত আপনার দিক থেকে ভাববিনিময়ের পথ খোলা রয়েছে। এটা হয়তো সহজ নয়। বাইবেল বলে যে, “নীরব থাকিবার কাল ও কথা কহিবার কাল” আছে। (উপদেশক ৩:৭) আপনার কিশোর বয়সি সন্তান যখন মনে করে যে, এখন কথা বলার সময়, তখন আপনার জন্য হয়তো তা নীরব থাকার সময়। আপনি হয়তো সেই সময়টা ব্যক্তিগত অধ্যয়ন, বিশ্রাম অথবা ঘরের কাজ করার জন্য আলাদা করে রেখেছেন। তবুও, আপনার অল্পবয়সি সন্তান যদি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চায়, তাহলে আপনার পরিকল্পনায় রদবদল করার চেষ্টা করুন এবং শুনুন। নতুবা সে হয়তো আর চেষ্টা করবে না। যিশুর উদাহরণ মনে রাখুন। একবার তিনি বিশ্রাম নেওয়ার জন্য সময় আলাদা করে রেখেছিলেন। কিন্তু, লোকেরা যখন তাঁর কথা শোনার জন্য চারপাশে ভিড় জমিয়েছিল, তখন তিনি বিশ্রাম নেওয়া বাদ দিয়েছিলেন এবং তাদেরকে শিক্ষা দিতে শুরু করেছিলেন। (মার্ক ৬:৩০-৩৪) অধিকাংশ কিশোর-কিশোরী উপলব্ধি করে যে, তাদের বাবা-মা ব্যস্ত জীবনযাপন করে কিন্তু তাদের এই আশ্বাসের প্রয়োজন রয়েছে যে, তাদের প্রয়োজনের সময় বাবা-মায়েরা সবসময় তাদের পাশে রয়েছে। তাই, সময় দিন ও বোঝার চেষ্টা করুন।
৭. বাবা-মাদের কী এড়িয়ে চলতে হবে?
৭ আপনি যখন কিশোর বয়সি ছিলেন, তখন আপনার কেমন লাগত, তা মনে করার চেষ্টা করুন আর আপনার কৌতুকবোধ হারিয়ে ফেলবেন না! সন্তানদের সঙ্গে থাকাকে বাবা-মাদের উপভোগ করতে হবে। যখন অবসর সময় হাতে থাকে, তখন বাবা-মায়েরা তা কীভাবে ব্যয় করে? তারা যদি সবসময় তাদের অবসর সময়কে এমন কিছু করায় ব্যয় করতে চায়, যেগুলো তাদের পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করে না, তাহলে তাদের কিশোর-কিশোরীরা সহজেই তা লক্ষ করবে। বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে-মেয়েরা যদি এই উপসংহারে আসে যে, তাদের বাবা-মায়ের চেয়ে বরং স্কুলের বন্ধুবান্ধবরা তাদের জন্য আরও বেশি চিন্তা করে, তাহলে তারা বিভিন্ন সমস্যায় পড়বেই।
যে-বিষয়ে ভাববিনিময় করবেন
৮. কীভাবে সততা, কঠোর পরিশ্রম এবং সঠিক আচরণের প্রতি উপলব্ধি সন্তানদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে?
৮ বাবা-মায়েরা যদি ইতিমধ্যেই তাদের সন্তানদের মধ্যে সততা ও কঠোর পরিশ্রমের জন্য উপলব্ধিবোধ গেঁথে না দিয়ে থাকে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই কিশোর বয়সে তাদের তা গেঁথে দেওয়া উচিত। (১ থিষলনীকীয় ৪:১১; ২ থিষলনীকীয় ৩:১০) এ ছাড়া, তাদের এই বিষয়টাও নিশ্চিত করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ যে, তাদের সন্তানরা যেন নৈতিক ও শুদ্ধ জীবনযাপন করার গুরুত্ব পূর্ণহৃদয়ে বিশ্বাস করে। (হিতোপদেশ ২০:১১) এই ক্ষেত্রগুলোতে বাবা-মায়েরা তাদের উদাহরণের মাধ্যমে অনেক কিছু জানাতে পারে। ঠিক যেমন অবিশ্বাসী স্বামীকে “বাক্য বিহীনে আপন আপন ভার্য্যার আচার ব্যবহার দ্বারা . . . লাভ করা” যেতে পারে, তেমনই কিশোর-কিশোরীরা তাদের বাবা-মায়ের আচরণের মাধ্যমে সঠিক নীতিগুলো শিখতে পারে। (১ পিতর ৩:১, ২) তবে, শুধু উদাহরণই যথেষ্ট নয় যেহেতু সন্তানরা বাড়ির বাইরে অনেক খারাপ উদাহরণ এবং প্রলুব্ধকর অজস্র অপপ্রচারের সম্মুখীনও হয়ে থাকে। তাই, যত্নবান বাবা-মাদের তাদের কিশোর-কিশোরীরা যা দেখে ও শোনে, সেই সম্বন্ধে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে হবে আর এর জন্য অর্থপূর্ণ কথাবার্তার প্রয়োজন।—হিতোপদেশ ২০:৫.
৯, ১০. বাবা-মাদের কেন সন্তানদেরকে যৌন সংক্রান্ত বিষয় সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়ার বিষয়টা নিশ্চিত করা উচিত আর কীভাবে তারা তা করতে পারে?
৯ বিশেষভাবে যৌন সংক্রান্ত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে তা সত্য। বাবা-মায়েরা, আপনারা কি আপনাদের সন্তানদের সঙ্গে যৌন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেন? এমনকি আপনি যদি অস্বস্তি বোধ করেও থাকেন, তবুও তা বলার প্রচেষ্টা করুন কারণ আপনার অল্পবয়সি সন্তানরা নিশ্চিতভাবে এই বিষয় সম্বন্ধে অন্য কারো কাছ থেকে জানতে পারবে। তারা যদি আপনার কাছ থেকে শিখে না থাকে, তাহলে কে জানে, তারা কোন বিকৃত তথ্য লাভ করবে? বাইবেলে যিহোবা যৌন সংক্রান্ত বিষয়গুলো এড়িয়ে যাননি আর বাবা-মাদেরও তা করা উচিত নয়।—হিতোপদেশ ৪:১-৪; ৫:১-২১.
১০ আনন্দের বিষয় যে, যৌন সংক্রান্ত আচরণের বিষয়ে বাইবেলে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে আর ওয়াচটাওয়ার সোসাইটি এমন অনেক উপকারী তথ্য প্রকাশ করেছে, যেগুলো দেখায় যে, এই নির্দেশনা এখনও আধুনিক জগতে প্রযোজ্য। সেই সাহায্যের সদ্ব্যবহার করুন না কেন? উদাহরণস্বরূপ, আপনার ছেলে অথবা মেয়ের সঙ্গে যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য—যে-উত্তরগুলো কাজ করে (ইংরেজি) বইয়ের “যৌনতা ও নৈতিকতা” বিভাগটা নিয়ে পুনরালোচনা করুন না কেন? ফলাফল দেখে আপনি হয়তো আনন্দিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অবাকও হয়ে যাবেন।
১১. যিহোবাকে কীভাবে সেবা করা যায়, সেই সম্বন্ধে বাবা-মাদের জন্য তাদের সন্তানদের শিক্ষা দেওয়ার সবচেয়ে কার্যকারী একটা উপায় কী?
১১ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা কী, যা বাবা-মা এবং সন্তানদের আলোচনা করা উচিত? প্রেরিত পৌল এই বিষয়টা উল্লেখ করেছিলেন, যখন তিনি লিখেছিলেন: “প্রভুর [“যিহোবার,” NW] শাসনে ও চেতনা প্রদানে [আপন আপন সন্তানদিগকে] মানুষ করিয়া তুল।” (ইফিষীয় ৬:৪) সন্তানদের ক্রমাগত যিহোবা সম্বন্ধে শিখতে হবে। বিশেষত, তাদের তাঁকে ভালবাসতে শিখতে হবে এবং তাদের তাঁকে সেবা করতে চাওয়া উচিত। এই ক্ষেত্রেও উদাহরণের সাহায্যে অনেক কিছু শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে। বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে-মেয়েরা যদি দেখে যে, বাবা-মায়েরা ‘তাহাদের সমস্ত অন্তঃকরণ, তাহাদের সমস্ত প্রাণ ও তাহাদের সমস্ত মন দিয়া’ ঈশ্বরকে প্রেম করে আর এর ফলে তা তাদের জীবনে উত্তম ফলাফল নিয়ে আসে, তাহলে সন্তানরা হয়তো একই বিষয় করার জন্য প্রভাবিত হবে। (মথি ২২:৩৭) একইভাবে, অল্পবয়সিরা যদি দেখে যে, বস্তুগত বিষয় সম্বন্ধে তাদের বাবা-মায়ের যুক্তিযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে এবং তারা ঈশ্বরের রাজ্যকে প্রথমে রাখছে, তাহলে সন্তানরাও একই মনোভাব গড়ে তোলার জন্য সাহায্য লাভ করবে।—উপদেশক ৭:১২; মথি ৬:৩১-৩৩.
১২, ১৩. পারিবারিক অধ্যয়নকে যদি সফল করতে হয়, তাহলে কোন বিষয়গুলো মনে রাখা উচিত?
১২ অল্পবয়সিদের সঙ্গে আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ নিয়ে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে সাপ্তাহিক পারিবারিক বাইবেল অধ্যয়ন এক উল্লেখযোগ্য সাহায্য। (গীতসংহিতা ১১৯:৩৩, ৩৪; হিতোপদেশ ৪:২০-২৩) নিয়মিতভাবে এই ধরনের অধ্যয়ন করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। (গীতসংহিতা ১:১-৩) বাবা-মা ও তাদের সন্তানদের উপলব্ধি করা উচিত যে, পারিবারিক অধ্যয়নকে ঘিরে অন্যান্য বিষয় তালিকাবদ্ধ করতে হবে, এর উলটোটা নয়। অধিকন্তু, পারিবারিক অধ্যয়ন কার্যকারী হওয়ার জন্য সঠিক মনোভাব অপরিহার্য। একজন বাবা বলেছিলেন: “পরিচালককে যদি পারিবারিক অধ্যয়নের সময়টাতে এক আরামদায়ক অথচ সম্মানজনক পরিবেশ গড়ে তুলতে হয়, তাহলে রহস্যটা হল—গতানুগতিক না হওয়া, তবে সেটা যেন আবার হালকা হয়ে না যায়। সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা হয়তো সবসময় সহজ নয় আর অল্পবয়সিদের মনোভাবকে প্রায়ই রদবদল করার প্রয়োজন হবে। একবার বা দুবার যদি সফল না-ও হওয়া যায়, তবুও ধৈর্য ধরুন এবং পরের বারের জন্য অপেক্ষা করুন।” সেই একই বাবা বলেছিলেন যে, প্রতিটা অধ্যয়নের আগে তার প্রার্থনার সময় তিনি নির্দিষ্টভাবে যিহোবার কাছ থেকে সাহায্য চাইতেন, যেন অধ্যয়নের সঙ্গে যুক্ত সকলে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করে।—গীতসংহিতা ১১৯:৬৬.
১৩ পারিবারিক অধ্যয়ন পরিচালনা করার দায়িত্ব হল বিশ্বাসী বাবা-মায়ের। এটা ঠিক যে, কিছু বাবা-মা হয়তো সহজাতভাবে দক্ষ শিক্ষক নয় আর তাদের জন্য পারিবারিক অধ্যয়নকে আগ্রহজনক করে তোলার বিভিন্ন উপায় খুঁজে বের করা হয়তো কঠিন হতে পারে। তা সত্ত্বেও, আপনারা যদি আপনাদের কিশোর-কিশোরীদের “কার্য্যে ও সত্যে” প্রেম করেন, তাহলে আপনারা তাদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে অগ্রগতি করার জন্য নম্র এবং অকপট উপায়ে সাহায্য করতে চাইবেন। (১ যোহন ৩:১৮) তারা হয়তো মাঝে মাঝে অভিযোগ করতে পারে কিন্তু সম্ভবত তাদের মঙ্গলের ব্যাপারে আপনাদের গভীর আগ্রহ তারা উপলব্ধি করতে পারবে।
১৪. কিশোর-কিশোরীদের কাছে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো প্রকাশ করার সময় কীভাবে দ্বিতীয় বিবরণ ১১:১৮, ১৯ পদ প্রয়োগ করা যেতে পারে?
১৪ পারিবারিক অধ্যয়নই একমাত্র সময় নয়, যখন আধ্যাত্মিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা যায়। আপনার কি বাবা-মাদের প্রতি দেওয়া যিহোবার আজ্ঞাটি মনে আছে? তিনি বলেছিলেন: “তোমরা আমার এই সকল বাক্য আপন আপন হৃদয়ে ও প্রাণে রাখিও, এবং চিহ্নরূপে আপন আপন হস্তে বাঁধিয়া রাখিও, এবং সে সকল ভূষণরূপে তোমাদের দুই চক্ষুর মধ্যে থাকিবে। আর তোমরা গৃহে উপবেশন ও পথে গমন কালে এবং শয়ন ও গাত্রোত্থান কালে ঐ সকল কথার প্রসঙ্গ করিয়া আপন আপন সন্তানদিগকে শিক্ষা দিও।” (দ্বিতীয় বিবরণ ১১:১৮, ১৯; এ ছাড়া দেখুন, দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৬, ৭.) এর অর্থ এই নয় যে, বাবা-মাদের সবসময় তাদের সন্তানদের কাছে প্রচার করতে হবে। কিন্তু, পরিবারের একজন প্রেমময় মস্তকের সবসময় তার পরিবারের আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার সুযোগগুলোর প্রতি সতর্ক থাকা উচিত।
শাসন এবং সম্মান
১৫, ১৬. (ক) শাসন কী? (খ) শাসন করার দায়িত্ব কার আর তাতে যে মনোযোগ দেওয়া হবে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার?
১৫ শাসন হল প্রশিক্ষণ, যা সংশোধন করে আর এর অন্তর্ভুক্ত ভাববিনিময়। শাসন শাস্তির চেয়ে বরং সংশোধনের ধারণাই বেশি বহন করে—যদিও শাস্তি দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। আপনার সন্তানরা যখন আরও ছোটো ছিল, তখন তাদের শাসনের প্রয়োজন ছিল আর এখন যেহেতু তারা কিশোর বয়সি, তাই এখনও তাদের নির্দিষ্ট ধরনের শাসন প্রয়োজন, সম্ভবত আরও বেশি। আর বিজ্ঞ কিশোর-কিশোরীরা জানে যে, এটা সত্য।
১৬ বাইবেল বলে: “অজ্ঞান আপন পিতার শাসন অগ্রাহ্য করে; কিন্তু যে অনুযোগ মানে, সেই সতর্ক হয়।” (হিতোপদেশ ১৫:৫) এই শাস্ত্রপদ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। এটি প্রকাশ করে যে, শাসন প্রদান করা হবে। একজন কিশোর বা কিশোরী ‘অনুযোগ মানিতে’ পারবে না, যদি না তা করা হয়। যিহোবা শাসন করার জন্য বাবা-মাদের, বিশেষ করে বাবাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু, সেই শাসনের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার দায়িত্ব হল কিশোর বা কিশোরীর। সে যদি তার বাবা ও মায়ের বিজ্ঞ শাসনের প্রতি মনোযোগ দেয়, তাহলে সে আরও বেশি শিখবে এবং কম ভুল করবে। (হিতোপদেশ ১:৮) বাইবেল বলে: “যে শাসন অমান্য করে, সে দরিদ্রতা ও লজ্জা পায়; কিন্তু যে অনুযোগ মান্য করে, সে সম্মানিত হয়।”—হিতোপদেশ ১৩:১৮.
১৭. শাসন করার সময় বাবা-মাদের কোন ভারসাম্য বজায় রাখার লক্ষ্য রাখতে হবে?
১৭ কিশোর-কিশোরীদের শাসন করার সময় বাবা-মাদের ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। তাদের এতটা কড়া হওয়া এড়িয়ে চলা উচিত যে, এর ফলে তাদের সন্তানরা বিরক্ত হয়, হতে পারে এমনকি তাদের সন্তানদের আত্মবিশ্বাসকে নষ্ট করে ফেলে। (কলসীয় ৩:২১) তবে, বাবা-মায়েরা এতটা প্রশ্রয়ীও হতে চায় না যে, তাদের অল্পবয়সিরা অতীব গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হয়। এই ধরনের প্রশ্রয় ধ্বংসাত্মক হতে পারে। হিতোপদেশ ২৯:১৭ পদ বলে: “তোমার পুত্ত্রকে শাস্তি দেও, সে তোমাকে শান্তি দিবে, সে তোমার প্রাণকে আনন্দিত করিবে।” কিন্তু, ২১ পদ (বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) বলে: “ছেলেবেলা থেকে যদি কোন দাসকে আশ্কারা দেওয়া হয়, শেষে তাকে দমন করা যায় না।” যদিও এই পদ একজন দাসের বিষয়ে বলছে কিন্তু তা ঘরের যেকোনো অল্পবয়সির প্রতিও সমভাবে প্রযোজ্য।
১৮. শাসন কীসের প্রমাণ আর বাবা-মা যখন সংগতিপূর্ণ শাসন করে, তখন কী এড়ানো যায়?
১৮ সত্যি বলতে কী, সঠিক শাসন হল সন্তানের প্রতি বাবা অথবা মায়ের ভালবাসার এক প্রমাণ। (ইব্রীয় ১২:৬, ১১) আপনি যদি একজন বাবা অথবা মা হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি জানেন যে, সংগতিপূর্ণ ও যুক্তিযুক্ত শাসন বজায় রাখা কঠিন। শান্তি বজায় রাখার জন্য হয়তো কোনো একগুঁয়ে সন্তান যা করতে চায়, তাকে তা-ই করতে দেওয়া আরও সহজ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু, যে-বাবা অথবা মা এই দ্বিতীয় উপায়টা অবলম্বন করেন, তার পরিবার পরিশেষে এমন হয়ে উঠবে, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে।—হিতোপদেশ ২৯:১৫; গালাতীয় ৬:৯.
কাজ এবং খেলাধুলা
১৯, ২০. কীভাবে বাবা-মায়েরা তাদের কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিনোদনের বিষয়টা বিজ্ঞতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারে?
১৯ প্রাচীনকালে সাধারণত আশা করা হতো যে, সন্তানরা ঘরে ও খামারে সাহায্য করবে। আজকে অনেক কিশোর-কিশোরীর তত্ত্বাবধানহীনভাবে কাটানোর মতো প্রচুর অবসর সময় রয়েছে। সেই সময় পূরণ করার উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিক জগৎ অবসর সময় কাটানোর জন্য অঢেল বিষয়বস্তু জুগিয়ে থাকে। এগুলোর সঙ্গে এও দেখা যায় যে, জগৎ নৈতিকতা সম্বন্ধে বাইবেলের মানগুলোর প্রতি খুব সামান্যই মূল্য দিয়ে থাকে আর তাই সম্ভাব্য বিপর্যয় সম্বন্ধে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন।
২০ তাই, বিচক্ষণ বাবা অথবা মা বিনোদন সম্বন্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বজায় রাখেন। তবে, ভুলে যাবেন না যে, কিশোর-কিশোরীরা বড় হচ্ছে। প্রতি বছর সে সম্ভবত আশা করবে যে, তার সঙ্গে যেন প্রাপ্তবয়স্কের মতো আচরণ করা হয়। এভাবে, কিশোর-কিশোরীরা যখন বড় হতে থাকে, তখন বিনোদন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরও স্বাধীনতা দেওয়া একজন বাবা অথবা মায়ের জন্য বিজ্ঞতার কাজ—যতক্ষণ পর্যন্ত সেই বাছাইগুলো আধ্যাত্মিক পরিপক্বতার দিকে উন্নতিকে প্রতিফলিত করে। মাঝে মাঝে কিশোর বা কিশোরী হয়তো গানবাজনা, মেলামেশা ও অন্যান্য বিষয়ে মূর্খতাপূর্ণ বাছাই করতে পারে। যখন এইরকমটা হয়, তখন কিশোর বা কিশোরীর সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে আরও ভাল বাছাই করা যায়।
২১. কীভাবে বিনোদনের পিছনে কাটানো সময়ের ক্ষেত্রে যুক্তিবাদিতা একজন কিশোর বা কিশোরীকে সুরক্ষা করবে?
২১ বিনোদনের জন্য কতটা সময় দেওয়া উচিত? কিছু দেশে, কিশোর-কিশোরীদেরকে এটা বিশ্বাস করতে পরিচালিত করা হয় যে, তাদের সর্বদা আমোদপ্রমোদ করার অধিকার রয়েছে। তাই, বয়ঃসন্ধিকালের একজন ছেলে বা মেয়ে হয়তো এমনভাবে তার তালিকা তৈরি করতে পারে, যাতে সে একটার পর একটা “মজা করার সময়” কাটাতে পারে। কিন্তু, বাবা-মায়ের দায়িত্ব হল এই শিক্ষা প্রদান করা যে, অন্যান্য বিষয়েও সময় ব্যয় করা উচিত যেমন পরিবার, ব্যক্তিগত অধ্যয়ন, আধ্যাত্মিকভাবে পরিপক্ব ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলামেশা, খ্রিস্টীয় সভা এবং ঘরের টুকিটাকি কাজকর্ম। আর এটা ‘জীবনের সুখভোগের’ দ্বারা ঈশ্বরের বাক্যকে চেপে রাখতে দেবে না।—লূক ৮:১১-১৫.
২২. একজন কিশোর বা কিশোরীর জীবনে বিনোদন কীসের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া উচিত?
২২ রাজা শলোমন বলেছিলেন: “আমি জানি, যাবজ্জীবন আনন্দ ও সৎকর্ম্ম করণ ব্যতীত আর মঙ্গল তাহাদের হয় না। আর প্রত্যেক মনুষ্য যে ভোজন পান ও সমস্ত পরিশ্রমের মধ্যে সুখভোগ করে, ইহাও ঈশ্বরের দান।” (উপদেশক ৩:১২, ১৩) হ্যাঁ, আনন্দ করা ভারসাম্যপূর্ণ জীবনের এক অংশ। কিন্তু, কঠোর পরিশ্রমও ঠিক তা-ই। আজকে অনেক কিশোর-কিশোরী সেই পরিতৃপ্তি সম্বন্ধে জানতে পারে না, যা কঠোর পরিশ্রম থেকে আসে অথবা সেই আত্মসম্মানবোধ সম্বন্ধে জানতে পারে না, যা কোনো সমস্যা মোকাবিলা করা ও তা সমাধান করা থেকে আসে। কাউকে কাউকে এমন কোনো দক্ষতা বা কাজের অভ্যাস গড়ে তোলার সুযোগ দেওয়া হয় না, যা পরবর্তী জীবনে নিজেদের ভরণপোষণ জোগাতে সাহায্য করে। এখানেই বাবা-মাদের জন্য এক প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। আপনি কি এই বিষয়টা নিশ্চিত করবেন যে, আপনার অল্পবয়সি সন্তানের এই ধরনের সুযোগ রয়েছে? আপনি যদি আপনার কিশোর বা কিশোরী সন্তানকে কঠোর পরিশ্রমের মূল্য বুঝতে ও এমনকি তা উপভোগ করতে শিক্ষা দেওয়ায় সফল হতে পারেন, তাহলে সে এমন এক গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলবে, যা চিরজীবনের জন্য উপকার নিয়ে আসবে।
কিশোর বয়স থেকে প্রাপ্তবয়স্ক
২৩. কীভাবে বাবা-মায়েরা তাদের কিশোর বা কিশোরী সন্তানদের উৎসাহিত করতে পারে?
২৩ এমনকি আপনার কিশোর বা কিশোরী সন্তানের সঙ্গে যখন সমস্যা হয়, তখনও এই শাস্ত্রপদ সত্য: “প্রেম কখনও শেষ হয় না।” (১ করিন্থীয় ১৩:৮) নিঃসন্দেহে আপনি যে-প্রেম অনুভব করেন, তা দেখাতে কখনো বিরত হবেন না। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘সমস্যা মোকাবিলা করার অথবা বাধা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রতিটা সন্তানের সাফল্যে আমি কি তাকে প্রশংসা করি? আমি কি আমার সন্তানদের প্রতি আমার প্রেম ও উপলব্ধি প্রকাশের সুযোগগুলো চলে যাওয়ার আগেই সেগুলোর সদ্ব্যবহার করি?’ যদিও মাঝে মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে, তবুও কিশোর-কিশোরীরা যদি তাদের প্রতি আপনাদের প্রেম সম্বন্ধে নিশ্চিত বোধ করে, তাহলে তারাও খুব সম্ভবত প্রতিদানে প্রেম দেখাবে।
২৪. সন্তান লালনপালন করার ক্ষেত্রে কোন শাস্ত্রীয় নীতি এক সাধারণ নিয়ম হিসেবে সত্য প্রমাণিত হয় কিন্তু কী মনে রাখা উচিত?
২৪ অবশ্য, সন্তানরা যখন প্রাপ্তবয়স্ক হতে থাকে, তখন তারা হয়তো অবশেষে নিজেদের জন্য বড় বড় সিদ্ধান্ত নেবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাবা-মা হয়তো সেই সিদ্ধান্তগুলো পছন্দ না-ও করতে পারে। তাদের সন্তান যদি যিহোবা ঈশ্বরকে আর সেবা না করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে কী? এমনটা ঘটতে পারে। এমনকি যিহোবার কিছু আত্মিক পুত্রও তাঁর পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং বিদ্রোহী হয়েছিল। (আদিপুস্তক ৬:২; যিহূদা ৬) সন্তানরা কম্পিউটার নয় যে, তাদেরকে আমরা যেভাবে চাই সেভাবে কাজ করার জন্য প্রোগ্রাম করে দেওয়া যেতে পারে। তাদেরকে স্বাধীন ইচ্ছা দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে আর তারা তাদের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর জন্য যিহোবার কাছে নিকাশ দেবে। তা সত্ত্বেও, হিতোপদেশ ২২:৬ পদ এক সাধারণ নিয়ম হিসেবে এই সত্য তুলে ধরে: “বালককে তাহার গন্তব্য পথানুরূপ শিক্ষা দেও, সে প্রাচীন হইলেও তাহা ছাড়িবে না।”
২৫. বাবা-মা হওয়ার বিশেষ সুযোগের জন্য যিহোবার প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানোর ক্ষেত্রে বাবা-মাদের জন্য সর্বোত্তম উপায়টা কী?
২৫ তাহলে, আপনার সন্তানদের প্রতি প্রচুর ভালবাসা দেখান। তাদেরকে মানুষ করে তোলার ক্ষেত্রে বাইবেলের নীতিগুলো অনুসরণ করার জন্য আপনার সর্বোত্তমটুকু করুন। ঈশ্বরীয় আচরণের এক উত্তম উদাহরণ স্থাপন করুন। এভাবে আপনি আপনার সন্তানদেরকে দায়িত্ববান ও ঈশ্বরভয়শীল প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গড়ে ওঠার সর্বোত্তম সুযোগ দেবেন। বাবা-মা হওয়ার বিশেষ সুযোগের জন্য যিহোবার প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানোর ক্ষেত্রে বাবা-মাদের জন্য এটা হল সর্বোত্তম উপায়।