পাঠ ৫২
পোশাক-আশাক ও সাজগোজের বিষয়ে চিন্তা করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
আমাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা পছন্দ রয়েছে, যেমন কোন ধরনের পোশাক পরব, কীভাবে চুলের স্টাইল করব আর কীভাবে সাজগোজ করব। বাইবেলেও এই বিষয়ে কিছু নীতি দেওয়া রয়েছে। আমরা যদি এই নীতিগুলো মেনে চলি, তা হলে আমরা নিজেদের পছন্দের পোশাক পরতে পারব এবং সাজগোজ করতে পারব আর যিহোবার হৃদয়কেও খুশি করতে পারব। আসুন, কয়েকটা নীতি লক্ষ করি।
১. পোশাক-আশাক ও সাজগোজের বিষয়ে আমাদের কোন নীতিগুলো মনে রাখতে হবে?
আমাদের ‘মার্জিতভাবে এবং উত্তম বিচারবুদ্ধি সহকারে উপযুক্ত পোশাক-আশাক পরা’ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত, যাতে লোকেরা বুঝতে পারে, “আমাদের ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি রয়েছে।” (১ তীমথিয় ২:৯, ১০) আসুন এই চারটে নীতি নিয়ে বিবেচনা করি: (১) আমাদের “উপযুক্ত পোশাক-আশাক পরা” উচিত। মণ্ডলীতে আপনি লক্ষ করেছেন যে, ভাই-বোনেরা ভিন্ন ভিন্ন পোশাক পরে এবং ভিন্ন ভিন্ন চুলের স্টাইল করে। কিন্তু, তাদের পোশাক-আশাক ও সাজগোজ এটা প্রকাশ করে যে, তারা যিহোবাকে সম্মান করে। (২) আমরা যেন “মার্জিতভাবে” পোশাক পরি এবং সাজগোজ করি। এর অর্থ হল, আমরা এমন পোশাক-আশাক পরব না, যার ফলে লোকদের মনে নোংরা বা খারাপ চিন্তাভাবনা আসে অথবা আমাদের এমন পোশাক-আশাক পরা উচিত নয়, যাতে লোকেরা আমাদের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। (৩) আমাদের “উত্তম বিচারবুদ্ধি” দেখানো উচিত। আজকাল নিত্যনতুন ফ্যাশন দেখতে পাওয়া যায়। তবে, এর অর্থ এই নয় যে, আমরা অন্ধের মতো যেকোনো ধরনের ফ্যাশন অথবা স্টাইল গ্রহণ করব। (৪) আমরা যে-ধরনের পোশাক-আশাক পরি এবং সাজগোজ করি, সেটার মাধ্যমে যেন সবসময় এটা প্রকাশ পায় যে, “আমাদের ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি রয়েছে” এবং আমরা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করি।—১ করিন্থীয় ১০:৩১.
২. পোশাক-আশাক ও সাজগোজের বিষয়টা বাছাই করার সময় কেন আমাদের ভাই-বোনদের কথা মাথায় রাখা উচিত?
আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক-আশাক পরার এবং সাজগোজ করার স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু, আমাদের এটা চিন্তা করা উচিত যে, সেগুলো দেখে ভাই-বোনদের কেমন লাগবে। তাদের কি খারাপ লাগবে? তারা কি বিরক্ত হবে? আমরা চাই না, কেউ যেন আমাদের কারণে বিরক্ত হোক। এর পরিবর্তে, আমাদের বাইবেলের এই পরামর্শ কাজে লাগানো উচিত, যেখানে বলে, ‘প্রতিবেশীদের গেঁথে তোলার জন্য তাদের প্রতি ভালো কাজ করে তাদের সন্তুষ্ট করো।’—পড়ুন, রোমীয় ১৫:১, ২.
৩. আমাদের ভালো পোশাক-আশাক ও সাজগোজ কীভাবে অন্যদের সত্যের প্রতি আকৃষ্ট করতে পারে?
আমরা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরি এবং সাজগোজ করি। কিন্তু, আমরা যখন সভাতে ও প্রচারে যাই, তখন আমরা বিশেষ করে এই বিষয়টা খেয়াল রাখি যে, আমরা কোন ধরনের পোশাক-আশাক পরেছি এবং আমাদের দেখতে কেমন লাগছে। আমরা কখনোই চাই না যে, লোকদের মনোযোগ আমাদের বার্তার উপর থেকে সরে গিয়ে আমাদের উপরে আসুক। এর পরিবর্তে, আমরা চাই আমাদের পোশাক-আশাক যেন লোকদের সত্যের প্রতি আকৃষ্ট করে এবং “আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের শিক্ষার সৌন্দর্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।”—তীত ২:১০.
গভীরভাবে গবেষণা করুন
আমাদের এই বিষয়টা মনে রাখা উচিত যে, আমরা যে-ধরনের পোশাক-আশাক পরি এবং সাজগোজ করি, তা যেন একজন খ্রিস্টানের জন্য উপযুক্ত হয়। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? আসুন তা জানি।
৪. আমাদের পোশাক-আশাক ও সাজগোজ যেন যিহোবার সম্মান নিয়ে আসে
আমাদের পোশাক-আশাক ও সাজগোজ নিয়ে চিন্তা করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণটা কী? আসুন তা জানি। গীতসংহিতা ৪৭:২ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
-
আমাদের সঙ্গে যিহোবার নাম জড়িত রয়েছে। তাই, এই বিষয়টা মাথায় রেখে আমাদের কোন ধরনের পোশাক-আশাক পরা উচিত?
-
আপনার কি মনে হয় যে, সভাতে ও প্রচারে যাওয়ার সময় আপনার পোশাক-আশাক ও সাজগোজ নিয়ে চিন্তা করা উচিত? কেন আপনি তা মনে করেন?
৫. কীভাবে আমি নির্ধারণ করতে পারি যে, কী পরব আর আমাকে দেখতে কেমন লাগবে?
আমাদের পোশাক-আশাক দামি হোক কিংবা কম দামি, সেটা বড়ো বিষয় নয়। কিন্তু, তা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয় এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী উপযুক্ত হয়। ১ করিন্থীয় ১০:২৪ এবং ১ তীমথিয় ২:৯, ১০ পদ পড়ুন এবং এরপর আলোচনা করুন যে, কেন আমাদের এই ধরনের পোশাক-আশাক পরা উচিত নয়, যেগুলো . . .
-
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নয় এবং অতিরিক্ত ঢিলেঢালা অথবা খোলামেলা।
-
টাইট কিংবা ছোটো অথবা যেগুলো দেখে লোকদের মনে খারাপ কিংবা নোংরা চিন্তাভাবনা আসতে পারে।
আমরা যদিও মোশির ব্যবস্থার অধীনে নই, কিন্তু আমরা সেখান থেকে যিহোবার চিন্তাভাবনা সম্বন্ধে জানতে পারি। দ্বিতীয় বিবরণ ২২:৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
-
কেন আমাদের এমন পোশাক-আশাক পরা এবং চুলের স্টাইল করা উচিত নয়, যাতে একজন ছেলেকে মেয়ের মতো আর একজন মেয়েকে ছেলের মতো দেখায়?
১ করিন্থীয় ১০:৩২, ৩৩ এবং ১ যোহন ২:১৫, ১৬ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
-
আমাদের পোশাক-আশাক ও সাজগোজ দেখে আমাদের আশেপাশের লোকেরা এবং মণ্ডলীর ভাই-বোনেরা যেন খারাপ না ভাবে, সেই বিষয়ে কেন আমাদের খেয়াল রাখা উচিত?
-
আপনি যেখানে থাকেন, সেখানকার লোকেরা সাধারণত কোন ধরনের পোশাক পরে এবং সাজগোজ করে?
-
আপনার কি মনে হয়, সেগুলো একজন খ্রিস্টানের জন্য উপযুক্ত না-ও হতে পারে? কেন আপনি তা মনে করেন?
কেউ কেউ বলে থাকে: “আমার ইচ্ছা আমি যা খুশি পরব।”
-
আপনিও কি তা-ই মনে করেন? কেন আপনি তা মনে করেন?
সারাংশ
আমরা যখন চিন্তাভাবনা করে পোশাক-আশাক পরি এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকি আর আমাদের দেখতে ভালো লাগে, তখন আমরা যিহোবার ও অন্যদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে থাকি।
পুনরালোচনা
-
যিহোবার কাছে কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমরা উপযুক্ত পোশাক-আশাক পরি এবং সাজগোজ করি?
-
পোশাক-আশাক ও সাজগোজের বিষয়ে আমাদের কোন নীতিগুলো মনে রাখতে হবে?
-
আমাদের পোশাক-আশাক ও সাজগোজ দেখে লোকেরা যিহোবা এবং তাঁর মানগুলোকে কীভাবে দেখতে পারে?
আরও জানুন
আপনার পোশাক-আশাক আপনার সম্বন্ধে কী জানায়? আসুন তা জানি।
ট্যাটু করার আগে কেন সেটা নিয়ে চিন্তা করা ভালো? আসুন তা জানি।
পোশাক-আশাকের বিষয়ে আমাদের আর কোন নীতিগুলো মনে রাখা উচিত? আসুন তা জানি।
“আপনার পোশাক-আশাকের ধরন কি ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করে?” (প্রহরীদুর্গ, সেপ্টেম্বর, ২০১৬)
একজন মহিলার জন্য এটা বোঝা কঠিন ছিল যে, পোশাক-আশাকের বিষয়ে প্রত্যেকের আলাদা আলাদা পছন্দ থাকতে পারে। সত্য জানার পর কীভাবে তিনি এই বিষয়ে সঠিক চিন্তাভাবনা গড়ে তুলতে পেরেছিলেন? আসুন তা জানি।
“তাদের পোশাক-আশাক ও সাজগোজ আমার জন্য বাধাস্বরূপ ছিল” (সচেতন থাক!, ডিসেম্বর ২২, ২০০৩, ইংরেজি)