সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আধুনিক জীবনে প্রাচীন প্রজ্ঞা

মন থেকে ক্ষমা করুন

মন থেকে ক্ষমা করুন

বাইবেলের নীতি: “যদি কাহাকেও দোষ দিবার কারণ থাকে, তবে পরস্পর ক্ষমা কর; প্রভু যেমন তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়াছেন, তোমরাও  তেমনি  কর।”—কলসীয় ৩:১৩.

এর অর্থ কী? বাইবেলে পাপকে ঋণ এবং ক্ষমা করাকে ঋণ মকুব করার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। (মথি ১৮:২১-৩৫) একটা তথ্যগ্রন্থ বলে, শাস্ত্র-এ যে-গ্রিক শব্দকে “ক্ষমা কর” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটার অর্থ হল, “কোনো ঋণ দাবি না করে ছেড়ে দেওয়া।” তাই, আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় করেছে, এমন কোনো ব্যক্তিকে আমরা যখন ক্ষমা করি, তখন সেটার বিনিময়ে কিছু দাবি করি না। তবে, ক্ষমা করার বিষয়ে আমাদের ইচ্ছুক মনোভাবের অর্থ এই নয় যে, আমরা সেই ব্যক্তির মন্দ আচরণকে প্রশ্রয় দিচ্ছি অথবা এর ফলে আমরা যে-কষ্ট পেয়েছি, সেটাকে হালকাভাবে দেখছি। এর পরিবর্তে, আমরা অসন্তোষ পুষে না রাখার সিদ্ধান্ত নিই, এমনকী যদি “দোষ দিবার” উপযুক্ত ‘কারণও থাকে।’

এটা কি বর্তমানেও ব্যাবহারিক? অসিদ্ধ মানুষ হিসেবে আমরা সকলেই পাপ করি। (রোমীয় ৩:২৩) তাই স্বেচ্ছায় অন্যদের ক্ষমা করার মাধ্যমে আমরা বিজ্ঞতা দেখাই, কারণ আজ হোক বা কাল হোক অন্যদের কাছ থেকে আমাদেরও ক্ষমা লাভ করার প্রয়োজন হবে। শুধু তাই নয়, আমরা যখন অন্যদের ক্ষমা করি, তখন আমরা ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হই। কীভাবে?

আমরা যখন ক্ষমা করার পরিবর্তে রাগ ও অসন্তোষ পুষে রাখি, তখন আমরা আসলে নিজেদেরই ক্ষতি করি। এই ধরনের নেতিবাচক অনুভূতি আমাদের ব্যক্তিগত আনন্দ কেড়ে নিতে পারে এবং আমাদের কষ্ট দিতে পারে। এ ছাড়া, এটা গুরুতর শারীরিক সমস্যা নিয়ে আসতে পারে। ডা. ইয়োয়িচি চিডা এবং মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক অ্যন্ড্রু স্টেপটো জার্নাল অভ্‌ দি আমেরিকান কলেজ অভ্‌ কার্ডিয়োলজি-র একটা রিপোর্টে বলেন: “সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে, রাগ, শত্রুতা এবং হৃদরোগের মধ্যে এমন একটা সম্পর্ক রয়েছে, যেটা মানুষের ক্ষতি করে।”

অন্যদিকে, ক্ষমা করার উপকারিতাগুলো বিবেচনা করুন। আমরা যখন অন্যদেরকে মন থেকে ক্ষমা করি, তখন আমরা একতা এবং শান্তি আর সেইসঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখি। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এভাবে আমরা ঈশ্বরের অনুকারী হিসেবে প্রমাণিত হই, যিনি অনুতপ্ত পাপীদের মন থেকে ক্ষমা করেন আর আশা করেন, আমরাও যেন এমনটা করি।—মার্ক ১১:২৫; ইফিষীয় ৪:৩২; ৫:১. (w১৫-E ১০/০১)