এক দম্পতি হিসেবে আধ্যাত্মিকতাকে বৃদ্ধি করুন
পারিবারিক সুখের চাবিকাঠি
এক দম্পতি হিসেবে আধ্যাত্মিকতাকে বৃদ্ধি করুন
ফ্রেড্রিক *: “আমাদের বিয়ের প্রথম দিকে আমি জোর দিয়ে বলেছিলাম যে, আমি ও আমার স্ত্রী যেন একসঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করি। আমি এই সিদ্ধান্তে এসেছিলাম যে, সে আমাদের অধ্যয়ন পর্বে মনোযোগ দেবে। কিন্তু মনে হয় লিয়ান একটুও স্থির হয়ে বসে থাকতে পারত না। আর আমি যখন বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতাম, তখন সে শুধু হ্যাঁ অথবা না উত্তর দিত। যেভাবে বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালিত হওয়া উচিত বলে আমি মনে করতাম, তার উত্তরগুলো সেটার সঙ্গে খাপ খেত না।”
লিয়ান: “আমি যখন ফ্রেড্রিককে বিয়ে করেছিলাম, তখন আমার বয়স ছিল ১৮ বছর। আমরা নিয়মিতভাবে একসঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করতাম কিন্তু ফ্রেড্রিক প্রত্যেকটা পর্বকে আমার দোষগুলো এবং স্ত্রী হিসেবে যে-ক্ষেত্রগুলোতে আমার উন্নতি করার প্রয়োজন, সেগুলো তুলে ধরার এক সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করত। এতে আমি খুবই নিরুৎসাহিত হতাম এবং দুঃখ পেতাম!”
ফ্রেড্রিক এবং লিয়ানের সম্পর্কের মধ্যে কী সমস্যা ছিল বলে আপনি মনে করেন? তাদের উদ্দেশ্য ভালো ছিল। তারা দুজনেই ঈশ্বরকে ভালোবাসত। আর তারা দুজনেই বুঝতে পেরেছিল যে, তাদের একসঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করা দরকার। কিন্তু যে-বিষয়টা তাদেরকে একতাবদ্ধ হতে সাহায্য করতে পারত, তা বিপরীত ফল নিয়ে এসেছিল বলে মনে হয়। তারা হয়তো একসঙ্গে অধ্যয়ন করছিল কিন্তু এক দম্পতি হিসেবে তারা আধ্যাত্মিকতাকে বৃদ্ধি করছিল না।
আধ্যাত্মিকতা কী? কেন বিবাহিত দম্পতিদের এটাকে বৃদ্ধি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিত? তারা কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর মুখোমুখি হতে পারে আর কীভাবে তারা সেগুলোকে কাটিয়ে উঠতে পারে?
আধ্যাত্মিকতা কী?
বাইবেলে ব্যবহৃত “আত্মিক” বা আধ্যাত্মিকতা শব্দটি জীবনের প্রতি মনোভাব বা দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। (১ করিন্থীয় ২:১৫) উদাহরণস্বরূপ, বাইবেল লেখক পৌল একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তি এবং একজন মাংসিক ব্যক্তির মধ্যে মনোভাব সম্বন্ধীয় পার্থক্যকে তুলে ধরেন। পৌল ইঙ্গিত করেন, যাদের মধ্যে মাংসিক প্রবণতাগুলো রয়েছে, তারা অন্যদের চেয়ে নিজেদের প্রতি বেশি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে। তারা ঈশ্বরের মান অনুযায়ী জীবনযাপন করার চেষ্টা না করে, বরং নিজেদের দৃষ্টিতে যা সঠিক, তাই করে।—১ করিন্থীয় ২:১৪; গালাতীয় ৫:১৯, ২০.
এর বিপরীতে, যারা আধ্যাত্মিক মনোভাবাপন্ন, তারা ঈশ্বরের মানগুলোকে মূল্যবান বলে মনে করে। তারা যিহোবা ঈশ্বরকে তাদের বন্ধু হিসেবে দেখে এবং তাঁর ব্যক্তিত্বকে অনুকরণ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। (ইফিষীয় ৫:১) তাই, অন্যদের সঙ্গে আচরণ করার সময়ে তারা প্রেমময়, সদয় এবং মৃদুশীল হয়। (যাত্রাপুস্তক ) আর এমনকী যখন তাদের পক্ষে তা করা সহজ নয়, তখনও তারা ঈশ্বরের প্রতি বাধ্য থাকে। ( ৩৪:৬গীতসংহিতা ১৫:১, ৪) “আমি যা বুঝি, তা হল” ড্যারেন, যিনি কানাডায় বাস করেন ও ৩৫ বছর ধরে বিবাহিত, তিনি বলেন, “একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তি কীভাবে তার কথাবার্তা ও কাজকর্ম ঈশ্বরের সঙ্গে তার বন্ধুত্বের ওপর প্রভাব ফেলবে, সেই সম্বন্ধে সবসময় চিন্তা করেন।” তার স্ত্রী জেন আরও বলেন: “আমি মনে করি যে, একজন আধ্যাত্মিক স্ত্রী হলেন এমন একজন, যিনি তার ব্যক্তিত্বের মধ্যে ঈশ্বরের আত্মার ফল গড়ে তোলার জন্য প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করেন।”—গালাতীয় ৫:২২, ২৩.
অবশ্য, আধ্যাত্মিক মনোভাব গড়ে তোলার জন্য একজন ব্যক্তিকে বিয়ে করতে হবে এমন নয়। আসলে, বাইবেল শিক্ষা দেয় যে, প্রত্যেক ব্যক্তিরই ঈশ্বর সম্বন্ধে শেখার ও তাঁকে অনুকরণ করার দায়িত্ব রয়েছে।—প্রেরিত ১৭:২৬, ২৭.
কেন এক দম্পতি হিসেবে আধ্যাত্মিকতাকে বৃদ্ধি করতে হবে?
তাহলে কেন বিবাহিত সাথিদের এক দম্পতি হিসেবে আধ্যাত্মিকতাকে বৃদ্ধি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিত? এই উদাহরণটি বিবেচনা করুন: দুজন মালীর মিলিতভাবে একটা বাগান রয়েছে এবং তারা শাকসবজি চাষ করতে চায়। একজন বছরের নির্দিষ্ট একটা সময়ে বীজ বপন করবে বলে স্থির করেন, যেখানে অন্য জন চিন্তা করেন যে, তা পরে করা হবে। একজন জমিতে একটা বিশেষ ধরনের সার ব্যবহার করতে চান কিন্তু অন্য জন একেবারেই অসম্মত হন এবং মনে করেন যে, গাছে সার দেওয়ার দরকার নেই। একজন প্রতিদিন বাগানে কঠোর পরিশ্রম করতে চান। অন্য জন কাজ না করে, শুধু হাত-পা গুটিয়ে বসে থেকে দেখতে আনন্দ পান। এই ধরনের এক দৃশ্যপটে, বাগানে হয়তো কিছুটা ফল উৎপন্ন হতে পারে কিন্তু দুজন মালীই যদি যা করণীয়, তা করার জন্য একমত হতো আর তারপর সেই লক্ষ্যগুলোতে পৌঁছানোর জন্য একসঙ্গে কাজ করত, তাহলে বাগানে যতটা ফল উৎপন্ন হতো, সেটার তুলনায় ততটা হবে না।
একজন স্বামী ও স্ত্রী হল সেই মালীদের মতো। যদি কেবল একজন সাথি আধ্যাত্মিকতাকে বৃদ্ধি করেন, তাহলে হয়তো সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হতে পারে। (১ পিতর ৩:১, ২) কিন্তু, এটা আরও কতই না ভালো হয় যখন দুজন সাথিই ঈশ্বরের মান অনুযায়ী জীবনযাপন করার জন্য একমত হয় এবং ঈশ্বরকে সেবা করে চলার সময় একে অপরকে সমর্থন করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে! “এক জন অপেক্ষা দুই জন ভাল,” বিজ্ঞ রাজা শলোমন লিখেছিলেন। কেন? “কেননা তাহাদের পরিশ্রমে সুফল হয়। কারণ তাহারা পড়িলে এক জন আপন সঙ্গীকে উঠাইতে পারে।”—উপদেশক ৪:৯, ১০.
সম্ভবত আপনি আপনার বিবাহিত সাথির সঙ্গে আধ্যাত্মিকতাকে বৃদ্ধি করার জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষী। কিন্তু ঠিক বাগান করার মতোই, শুধুমাত্র আকাঙ্ক্ষা করা ফল উৎপন্ন করবে না। আপনি মুখোমুখি হতে পারেন এমন দুটো প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ও কীভাবে সেগুলোকে কাটিয়ে উঠতে পারেন তা বিবেচনা করুন।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা ১: আমরা সময় করতে পারি না। “আমার স্বামী সন্ধ্যা ৭টার সময় আমাকে কাজের জায়গা থেকে নিয়ে যায়,” সু বলেন, যিনি অল্পদিন হল বিয়ে করেছেন। “আমরা যখন বাড়িতে পৌঁছাই, তখন ঘরের সমস্ত কাজ আমাদের জন্য পড়ে থাকে। এটা হল মন ও শরীরের মধ্যে এক লড়াই; আমাদের মন আমাদেরকে বলে যে, আমাদের একসঙ্গে ঈশ্বর সম্বন্ধে শেখার জন্য সময় কাটানোর প্রয়োজন অথচ আমাদের শরীর আরাম চায়।”
সম্ভাব্য সমাধান: মানিয়ে নেওয়ার এবং সহযোগিতার মনোভাব রাখুন। সু বলেন: “আমার স্বামী ও আমি স্থির করেছিলাম যে, আমরা সকাল সকাল উঠে কাজে যাওয়ার আগে একসঙ্গে বাইবেলের একটা অংশ পড়ব ও আলোচনা করব। এ ছাড়া, সে আমাকে টুকিটাকি কাজকর্মে সাহায্য করে যাতে তার সঙ্গে কাটানোর জন্য আমার সময় থাকে।” এই অতিরিক্ত প্রচেষ্টার ফলে কোন উপকারগুলো লাভ করা যায়? সুয়ের স্বামী এড বলেন: “আমি দেখেছি যে, সু ও আমি যখন নিয়মিতভাবে একসঙ্গে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করি, তখন আমরা যে-সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হই, সেগুলোর সঙ্গে আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করি এবং আমাদের উদ্বেগগুলোকে হ্রাস করতে সক্ষম হই।”
একে অপরের সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনি যেন প্রতিদিন একসঙ্গে প্রার্থনা করার জন্য কয়েক মিনিট সময় ব্যয় করেন। কীভাবে সেটা সাহায্য করতে পারে? “কিছুদিন আগে,” রায়েন যিনি ১৬ বছর ধরে বিবাহিত, তিনি বলেন, “আমার স্ত্রী ও আমার সম্পর্কটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা প্রতিদিন রাতে একসঙ্গে প্রার্থনা করার জন্য সময় করে নিয়েছিলাম ও ঈশ্বরের কাছে আমাদের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছিলাম। আমি মনে করি যে, একসঙ্গে প্রার্থনা করা আমাদেরকে আমাদের সমস্যাগুলোকে সমাধান করতে এবং আমাদের বিবাহে পুনরায় আনন্দ লাভ করতে সাহায্য করেছিল।”
এটা করে দেখুন: এক দম্পতি হিসেবে আপনাদের প্রতি যে-ভালো বিষয়গুলো ঘটেছে, যে-বিষয়গুলোর জন্য আপনারা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে পারেন, প্রতিটা দিনের শেষে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য কয়েক মিনিট সময় করে নিন। এ ছাড়া, আপনারা যে-প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর মুখোমুখি হন, বিশেষ করে যে-প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য আপনাদের ঈশ্বরের সাহায্যের দরকার সেগুলো নিয়েও কথা বলুন। এক সাবধানবাণী:
আপনার সাথির ভুলগুলো কী, সেগুলো তাকে বলার এক সুযোগ হিসেবে এটাকে ব্যবহার করবেন না। এর পরিবর্তে, আপনারা যখন একসঙ্গে প্রার্থনা করেন, তখন কেবল সেই ভুলগুলোর বিষয়ই উল্লেখ করুন যেগুলোর ব্যাপারে আপনাদের একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। পরের দিন, প্রার্থনায় আপনারা যে-বিনতি করেছেন, সেটার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করুন।প্রতিদ্বন্দ্বিতা ২: আমাদের ভিন্ন পছন্দ রয়েছে। “আমি কোনোকালেই বসে বই পড়ার ব্যক্তি ছিলাম না,” টোনি বলেন। তার স্ত্রী ন্যাটেলি বলেন: “আমি পড়তে ভালোবাসি এবং আমি যা পড়েছি, তা নিয়ে কথা বলতে ভালোবাসি। কখনো কখনো আমার মনে হয়, আমরা যখন বাইবেল ভিত্তিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করি, তখন টোনি আমাকে কিছুটা ভয় পায়।”
সম্ভাব্য সমাধান: সহযোগিতার মনোভাব দেখান, প্রতিযোগী বা সমালোচক হবেন না। আপনার সাথিকে বলুন যে, সে যা করে, সেটাকে আপনি উপলব্ধি করেন এবং যিহোবার সেবায় যা সঠিক, তা করার জন্য সংকল্পবদ্ধ হতে আপনার সাথিকে সবসময় উৎসাহিত করুন। বাইবেলের বিষয়গুলো আলোচনার জন্য আমার স্ত্রীর উদ্যম কখনো কখনো একটু ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে,” টোনি বলেন, “আর অতীতে আমি তার সঙ্গে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে অনিচ্ছুক ছিলাম। কিন্তু, ন্যাটেলি সব ব্যাপারে খুবই সমর্থন জুগিয়ে থাকে। এখন আমরা নিয়মিতভাবে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো নিয়ে একসঙ্গে আলোচনা করি আর আমি জেনেছি যে, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তার সঙ্গে এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে আমার ভালো লাগে। এটা আমাদেরকে আরও স্বচ্ছন্দ হতে এবং এক দম্পতি হিসেবে শান্তিতে থাকতে সাহায্য করেছে।”
অনেক দম্পতি দেখেছে যে, তারা যখন একসঙ্গে বাইবেল পড়ার ও অধ্যয়ন করার জন্য প্রত্যেক সপ্তাহে নিয়মিতভাবে সময় আলাদা করে রাখে, তখন তাদের বিবাহিত জীবন উন্নত হয়। কিন্তু একটা সাবধানবাণীমূলক বিষয় হল: আপনি যখন কোনো শাস্ত্রীয় পরামর্শের বিষয় পড়েন, তখন সেটা আপনার সাথির প্রতি নয় বরং নিজের প্রতি কীভাবে প্রয়োগ করতে পারেন, তা আলোচনা করুন। (গালাতীয় ৬:৪) বৈবাহিক বিবাদ সম্বন্ধীয় বিষয়গুলো আপনাদের অধ্যয়ন পর্বগুলোর সময়ে নয়, বরং অন্য কোনো সময়ে আলোচনা করুন। কেন অধ্যয়নের সময়ে নয়?
এই বিষয়টা বিবেচনা করুন: আপনি যখন আপনার পরিবারের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করছেন, তখন কি আপনি সেই সময়টাকে ক্ষত পরিষ্কার করার জন্য বেছে নেবেন? সম্ভবত না। আপনি সকলের খিদে নষ্ট করবেন। ঈশ্বরের ইচ্ছা সম্বন্ধে শেখা ও সেটা পালন করাকে যিশু খাবার খাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। (মথি ৪:৪; যোহন ৪:৩৪) আপনি যদি প্রতি বার বাইবেল খোলার সময়ে আবেগগত ক্ষত নিয়ে কথা বলেন, তাহলে আপনি আপনার সাথির আধ্যাত্মিক ক্ষুধাকে নষ্ট করার কারণ হতে পারেন। অবশ্যই, সমস্যাগুলো নিয়ে আপনার আলোচনা করা দরকার। কিন্তু একটা নির্ধারিত সময়ে সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন।—হিতোপদেশ ১০:১৯; ১৫:২৩.
এটা করে দেখুন: আপনার সাথির দু-একটা গুণ সম্বন্ধে লিখে রাখুন যেগুলোকে আপনি সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি করেন। পরে আপনি যখন সেই গুণগুলোর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন, তখন আপনি আপনার সাথিকে বলুন যে, সে যেভাবে সেই গুণগুলোকে প্রদর্শন করে, সেটাকে আপনি কতখানি উপলব্ধি করেন।
আপনি যা বুনবেন তা-ই কাটবেন
আপনি যদি এক দম্পতি হিসেবে, আধ্যাত্মিকতাকে বোনেন বা বৃদ্ধি করেন, তাহলে পরিশেষে আপনি আরও শান্তিপূর্ণ ও সন্তুষ্টজনক এক বিবাহিত জীবন উপভোগ করবেন। বস্তুতপক্ষে, ঈশ্বরের বাক্য এই নিশ্চয়তা দেয় যে, “মনুষ্য যাহা কিছু বুনে তাহাই কাটিবে।”—গালাতীয় ৬:৭.
এই প্রবন্ধের শুরুতে উল্লেখিত ফ্রেড্রিক ও লিয়ান বাইবেলের এই নীতির সত্যটি শিখেছে। তারা এখন ৪৫ বছর ধরে বিবাহিত এবং জানে যে, অধ্যবসায়ী হওয়ার উপকার রয়েছে। “ভাববিনিময়ের অভাবের কারণে আমি আমার স্ত্রীকে দোষারোপ করতাম,” ফ্রেড্রিক বলেন। “কিন্তু, পরে আমি উপলব্ধি করেছিলাম যে, আমাকেও প্রচেষ্টা করতে হবে।” লিয়ান বলেন: “আমাদের কঠিন সময়গুলোতে, প্রকৃতপক্ষে যে-বিষয়টা আমাদেরকে সাহায্য করেছিল, তা ছিল যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি আমাদের পারস্পরিক প্রেম। বছরের পর বছর ধরে, আমরা নিয়মিতভাবে একসঙ্গে অধ্যয়ন ও প্রার্থনা করে আসছি। আমি যখন ফ্রেড্রিককে খ্রিস্টীয় গুণগুলো দেখানোর ক্ষেত্রে আরও প্রচেষ্টা করতে দেখি, তখন আমার পক্ষে তাকে ভালোবাসা আরও সহজ হয়ে ওঠে।” (w১১-E ১১/০১)
[পাদটীকা]
^ নামগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে।
নিজেকে জিজ্ঞেস করুন . . .
▪ এক দম্পতি হিসেবে শেষ কবে আমরা একসঙ্গে প্রার্থনা করেছি?
▪ আমি এমন কী করতে পারি যা আমার সাথিকে আমার সঙ্গে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য আরও বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করতে উৎসাহিত করবে?