তোমার কি কখনো এমনটা মনে হয়েছে যে, অন্যেরা তোমাকে ভিন্ন চোখে দেখে?
আপনাদের সন্তানদের শিক্ষা দিন
তোমার কি কখনো এমনটা মনে হয়েছে যে, অন্যেরা তোমাকে ভিন্ন চোখে দেখে?
অন্যেরা কাউকে ভিন্ন চোখে দেখে মানে অন্যেরা তাকে তাদের দলের অংশ বলে গ্রহণ করে না। হতে পারে তার গায়ের রং অথবা জাতীয়তা ভিন্ন কিংবা তার কথা বলার বা কাজ করার ধরন ভিন্ন। তুমি কি কখনো এমনটা মনে করেছ যে, অন্যেরা তোমাকে ভিন্ন চোখে দেখে?— *
এসো আমরা এমন একজন ব্যক্তির বিষয়ে আলোচনা করি, যিনি এরকম মনে করেছিলেন। তার নাম ছিল মফীবোশৎ। তিনি কে ছিলেন আর কেন তিনি এমনটা মনে করেছিলেন, এসো সেই বিষয়ে আমরা দেখি। তুমি যদি কখনো এমনটা মনে করো যে, অন্যেরা তোমাকে ভিন্ন চোখে দেখে, তাহলে তুমি মফীবোশতের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারো।
মফীবোশৎ, দায়ূদের প্রিয় বন্ধু যোনাথনের ছেলে ছিলেন। যোনাথন যুদ্ধে মারা যাওয়ার আগে, দায়ূদকে বলেছিলেন: ‘আমার সন্তানদের প্রতি দয়া করো।’ দায়ূদ রাজা হয়েছিলেন। অনেক বছর পর, যোনাথনের কথাগুলো তার মনে পড়েছিল আর মফীবোশৎ তখনও বেঁচে ছিলেন। ছোটোবেলায় তার এক মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তিনি তার বাকিটা জীবন হাঁটতে পারেননি। তুমি কি বুঝতে পারছো কেন তিনি হয়তো মনে করছিলেন যে, অন্যেরা তাকে ভিন্ন চোখে দেখে?—
দায়ূদ যোনাথনের ছেলের প্রতি দয়া দেখাতে চেয়েছিলেন। তাই মফীবোশতের জন্য দায়ূদ যিরূশালেমে তার বাড়ির কাছাকাছি একটা বাড়ির ব্যবস্থা করেছিলেন আর দায়ূদের খাবার টেবিলে তার জন্য বসার একটা জায়গাও রাখা হয়েছিল। মফীবোশতের দাস হওয়ার জন্য সীবঃ আর সেইসঙ্গে তার ছেলেদের ও দাসদেরকে তাকে দেওয়া হয়েছিল। দায়ূদ সত্যই যোনাথনের ছেলেকে সম্মানিত করেছিলেন! তুমি কি জানো এরপর কী হয়েছিল?—
দায়ূদের বাড়িতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছিল। দায়ূদের ছেলেদের মধ্যে একজন অবশালোম, তার বিরুদ্ধে গিয়ে রাজা
হওয়ার চেষ্টা করেছিল। দায়ূদকে তার জীবন বাঁচানোর জন্য পালাতে হয়েছিল। অন্যেরা যখন দায়ূদের সঙ্গে যাচ্ছিল, তখন মফীবোশৎও যেতে চেয়েছিলেন। দায়ূদের এই বন্ধুরা জানত যে, দায়ূদই ছিলেন ন্যায্য রাজা। কিন্তু মফীবোশৎ যেতে পারেননি কারণ তিনি একেবারেই হাঁটতে পারতেন না।সীবঃ দায়ূদকে বলেছিলেন যে, মফীবোশৎ আসলে রাজা হতে চেয়েছিলেন আর তাই তিনি থেকে গিয়েছিলেন। দায়ূদ সেই মিথ্যা কথা বিশ্বাস করেছিলেন! তাই তিনি সীবঃকে মফীবোশতের সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে দিয়েছিলেন। শীঘ্র দায়ূদ অবশালোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন ও যিরূশালেমে ফিরে এসেছিলেন। এখন দায়ূদ মফীবোশতের কাছ থেকে বিষয়টা শুনেছিলেন। দায়ূদ স্থির করেছিলেন যে, মফীবোশৎ ও সীবঃর সম্পত্তি ভাগ করে নেওয়া উচিত। মফীবোশৎ কী করেছিলেন বলে তুমি মনে করো?—
তিনি এই অভিযোগ করেননি যে, দায়ূদের সিদ্ধান্ত অন্যায্য ছিল। মফীবোশৎ জানতেন যে, রাজার শান্তিতে থাকা প্রয়োজন যাতে তিনি ভালোভাবে তার কাজ করতে পারেন। তাই তিনি বলেছিলেন যে, সীবঃ সমস্ত সম্পত্তি নিতে পারেন। মফীবোশতের কাছে যে-বিষয়টা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা হল যে, যিহোবার দাস দায়ূদ রাজা হিসেবে যিরূশালেমে ফিরে এসেছেন।
মফীবোশৎকে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল। তিনি প্রায়ই এমনটা মনে করতেন যে, অন্যেরা তাকে ভিন্ন চোখে দেখে। কিন্তু যিহোবা তাকে ভালোবাসতেন ও তার যত্ন নিয়েছিলেন। এই ঘটনা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?— এমনকী আমরা যখন যা সঠিক তা করি, তখনও কেউ কেউ হয়তো আমাদের সম্বন্ধে মিথ্যা বলতে পারে। যিশু বলেছিলেন: “জগৎ যদি তোমাদিগকে দ্বেষ করে, তোমরা ত জান, সে তোমাদের অগ্রে আমাকে দ্বেষ করিয়াছে।” লোকেরা এমনকী যিশুকে হত্যা করেছিল! আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, আমরা যদি যা সঠিক তা করি, তাহলে সত্য ঈশ্বর যিহোবা আমাদেরকে ভালোবাসবেন আর তাঁর পুত্র যিশুও আমাদেরকে ভালোবাসবেন। (w১১-E ০৬/০১)
তোমার বাইবেল থেকে পড়ো
২ শমূয়েল ৪:৪; ৯:১-১০; ১৯:২৪-৩০
[পাদটীকা]
^ আপনি যদি সন্তানের সঙ্গে এই প্রবন্ধটি পড়েন, তাহলে ড্যাশগুলো আপনাকে একটু থামতে ও সন্তানকে তার মনের কথা প্রকাশ করার জন্য উৎসাহ দেওয়ার বিষয়টা মনে করিয়ে দেয়।