সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনি চিরকাল বেঁচে থাকতে পারেন

আপনি চিরকাল বেঁচে থাকতে পারেন

আপনি চিরকাল বেঁচে থাকতে পারেন

 পৃথিবীর ধর্মগুলোর অধিকাংশ বিশ্বাসীরা কোনো না কোনোভাবে অনন্তজীবন লাভ করার ধারণাকে হৃদয়ে পোষণ করে থাকে। এই বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ হয়তো একেক ধর্মে একেক রকম কিন্তু আশা মূলত একই—মৃত্যুর হুমকি ছাড়া আদর্শ পরিস্থিতিতে সুখেশান্তিতে বেঁচে থাকা। আপনিও কি একইরকম আকাঙ্ক্ষা করেন না? প্রচলিত এই ধরনের বিশ্বাসকে কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? আর অনন্তজীবনের প্রত্যাশা কি কখনো বাস্তবায়িত হবে?

শাস্ত্র দেখায় যে, সৃষ্টিকর্তা প্রথম মানব দম্পতিকে সৃষ্টি করার সময় অর্থাৎ একেবারে শুরুতেই মানুষের চেতনার গভীরে অনন্তজীবনের আকাঙ্ক্ষাকে গেঁথে দিয়েছিলেন। “[ঈশ্বর] তাহাদের হৃদয়মধ্যে চিরকাল রাখিয়াছেন,” বাইবেল বলে।—উপদেশক ৩:১১.

কিন্তু, চিরকাল বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষাকে পরিপূর্ণ করার জন্য প্রথম মানব দম্পতিকে কোনটা ভাল ও কোনটা মন্দ, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে মেনে নিতে হতো। যদি তারা তা মেনে নিত, তা হলে যিহোবা তাদেরকে এদন উদ্যানে তাদের জন্য তিনি যে-গৃহ প্রস্তুত করেছিলেন, সেখানে ‘অনন্ত’ কাল ধরে বেঁচে থাকার যোগ্য বলে গণ্য করতেন।—আদিপুস্তক ২:৮; ৩:২২.

অনন্তজীবন হারিয়ে যায়

বাইবেলের বিবরণ দেখায় যে, ঈশ্বর উদ্যানে “সদসদ্‌-জ্ঞানদায়ক বৃক্ষ” রোপণ করেছিলেন, যে-বৃক্ষের ফল খেতে তিনি আদম ও হবাকে নিষেধ করেছিলেন, অন্যথায় তারা মৃত্যুদণ্ড ভোগ করবে। (আদিপুস্তক ২:৯, ১৭) আদম ও হবার সেই ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকা ঈশ্বরকে দেখাবে যে, তারা তাঁর কর্তৃত্বকে স্বীকার করে। অন্যদিকে, সেই বৃক্ষের ফল খাওয়া ইঙ্গিত করবে যে, তারা ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে অস্বীকার করে। আদম ও হবা যিহোবার নির্দেশনার অবাধ্য হয়েছিল এবং এক আত্মিক প্রাণী শয়তানের পক্ষ নিয়েছিল, যে ঈশ্বরের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। এর ফলে, যথার্থভাবেই ঈশ্বর স্থির করেছিলেন যে, আদম ও হবা চিরকাল বেঁচে থাকার অযোগ্য ছিল।—আদিপুস্তক ৩:১-৬.

ঈশ্বর যা দিতে চেয়েছিলেন, তা ছিল জীবন অথবা মৃত্যু, অস্তিত্বে থাকা অথবা অস্তিত্বহীন হয়ে যাওয়া। অবাধ্যতার ফল ছিল মৃত্যু এবং তাদের অস্তিত্বের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি। আদম ও হবা বা তাদের কোনো বংশধরের পক্ষে বিশেষ কোনো অলৌকিক পানীয় পান করে বেঁচে থাকা বা দেহের মৃত্যুর পরেও কোনো একটা অংশের বেঁচে থাকা সম্ভব ছিল না। *

আদমের সমস্ত বংশধর শুধুমাত্র তার বিদ্রোহের কারণে দুঃখকষ্ট ভোগ করেছে। প্রেরিত পৌল এর পরিণতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি লিখেছিলেন: “এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।”—রোমীয় ৫:১২.

অনন্তজীবন পুনরুদ্ধার করা হয়

প্রেরিত পৌল আদমের বংশধরদের অবস্থাকে প্রথম শতাব্দীর একজন দাসের অবস্থার সঙ্গে তুলনা করে স্পষ্ট করেছিলেন। উত্তরাধিকারসূত্রে পাপী হওয়ায়, আদম ও হবার সন্তানরা অনিবার্যরূপে মৃত্যুর জন্য নির্ধারিত “পাপের দাস” হিসেবে জন্ম নিয়েছিল। (রোমীয় ৫:১২; ৬:১৬, ১৭) এই দাসদের স্বাধীনতা ক্রয় করার জন্য যিহোবা যদি বৈধ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা না জোগাতেন, তা হলে এই দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব হতো না। পৌল ব্যাখ্যা করেছিলেন: “যেমন এক অপরাধ [অর্থাৎ আদমের] দ্বারা সকল মনুষ্যের কাছে দণ্ডাজ্ঞা পর্য্যন্ত ফল উপস্থিত হইল, তেমনি ধার্ম্মিকতার একটী কার্য্য দ্বারা সকল মনুষ্যের কাছে জীবনদায়ক ধার্ম্মিকগণনা পর্য্যন্ত ফল উপস্থিত হইল।” সেই “ধার্ম্মিকতার . . . কার্য্য” যিশুকে তাঁর নিজের সিদ্ধ মানবজীবন “সকলের নিমিত্ত মুক্তির মূল্যরূপে” বলি দিতে পরিচালিত করেছিল। মানবজাতিকে ‘দণ্ডাজ্ঞার’ “বিচার” থেকে মুক্তি দিতে যিহোবা মুক্তির মূল্যের বৈধ ক্ষমতাকে স্বীকার করেছিলেন।—রোমীয় ৫:১৬, ১৮, ১৯; ১ তীমথিয় ২:৫, ৬.

সেইজন্যই বিজ্ঞানীরা কখনো মানুষের বংশানুসংকেতের মধ্যে অন্তহীন জীবনের চাবিটা খুঁজে পাবে না। সেই চাবিটা অন্য কোথাও রয়েছে। বাইবেল অনুসারে, মানবজাতির মৃত্যুর মূল কারণ হচ্ছে নৈতিক ও বৈধ, কোনো জিনগত কারণ নয়। অনন্তজীবন পুনরুদ্ধার করার মাধ্যম—যিশুর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদান—একইভাবে বৈধ। এ ছাড়া, মুক্তির মূল্য ঈশ্বরের ধার্মিকতা ও প্রেমপূর্ণ-দয়ারও এক প্রকাশ। তা হলে, কারা মুক্তির মূল্য থেকে উপকৃত হবে এবং অনন্তজীবন লাভ করবে?

অমরত্বের উপহার

যিহোবা ঈশ্বর “অনাদিকাল হইতে অনন্তকাল” ধরে আছেন। তিনি অমর। (গীতসংহিতা ৯০:২) প্রথম যে-ব্যক্তিকে যিহোবা অমরত্বের উপহার অনুমোদন করেছিলেন, তিনি হলেন যিশু খ্রিস্ট। প্রেরিত পৌল ব্যাখ্যা করেন: “মৃতগণের মধ্য হইতে উঠিয়াছেন বলিয়া খ্রীষ্ট আর কখনও মরেন না, তাঁহার উপরে মৃত্যুর আর কর্ত্তৃত্ব নাই।” (রোমীয় ৬:৯) বস্তুতপক্ষে, মনুষ্য শাসকদের সঙ্গে পুনরুত্থিত যিশুর তুলনা করে পৌল তাঁকে তাদের মধ্যে একমাত্র অমরত্বের অধিকারী বলে বর্ণনা করেন। যিশু “অনন্তকাল” থাকবেন। তাঁর জীবন হল “অলোপ্য।”—ইব্রীয় ৭:১৫-১৭, ২৩-২৫; ১ তীমথিয় ৬:১৫, ১৬.

যিশু একাই এইরকম উপহার লাভ করেন না। আত্মায় অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা, যাদের স্বর্গীয় মহিমায় রাজা হিসেবে রাজত্ব করার জন্য মনোনীত করা হয়েছে, তারাও যিশুর মতোই একই ধরনের পুনরুত্থান লাভ করে। (রোমীয় ৬:৫) প্রেরিত যোহন দেখান যে, এই বিশেষ সুযোগটা ১,৪৪,০০০ জন ব্যক্তিবিশেষকে অনুমোদন করা হয়েছে। (প্রকাশিত বাক্য ১৪:১) তারাও অমরত্ব লাভ করে। তাদের পুনরুত্থান সম্বন্ধে পৌল বলেন: “রক্ত মাংস ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হইতে পারে না . . . তূরী বাজিবে, তাহাতে মৃতেরা অক্ষয় হইয়া উত্থাপিত হইবে, এবং আমরা রূপান্তরীকৃত হইব। কারণ এই ক্ষয়ণীয়কে অক্ষয়তা পরিধান করিতে হইবে, এবং এই মর্ত্ত্যকে অমরতা পরিধান করিতে হইবে।” এই ধরনের পুনরুত্থান যারা লাভ করে তাদের ওপর মৃত্যুর কোনো কর্তৃত্ব নেই।—১ করিন্থীয় ১৫:৫০-৫৩; প্রকাশিত বাক্য ২০:৬.

এই ঐশিক প্রকাশ সত্যিই অসাধারণ। দূতেরা আত্মিক প্রাণী হওয়া সত্ত্বেও, এমনকি তাদেরকে অমর করে সৃষ্টি করা হয়নি। এই বিষয়টা সেই ঘটনা থেকে দেখা যায়, যে-আত্মিক প্রাণীরা শয়তানের সঙ্গে বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিল তাদের ধ্বংস করা হবে। (মথি ২৫:৪১) অন্যদিকে, যিশুর সহশাসকরা, অমরত্বের উপহার লাভ করে, যেটা তাদের বিশ্বস্ততার প্রতি যিহোবার দৃঢ় আস্থার প্রমাণ।

এর মানে কি এই যে, পৃথিবীতে বেঁচে থাকা মানবজাতির কোটি কোটি লোকের তুলনায় অপেক্ষাকৃতভাবে অল্প সংখ্যক লোক, শুধুমাত্র ১,৪৪,০০০ জন অনন্তকাল বেঁচে থাকবে? না। কেন, আসুন আমরা তা দেখি।

এক পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তজীবন

বাইবেলের প্রকাশিত বাক্য বইটি, অগণিত সংখ্যক লোকের এক জনতার বিষয়ে এক চমৎকার চিত্র তুলে ধরে, যাদের এক পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তজীবন অনুমোদন করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে সেই সমস্ত ব্যক্তি রয়েছে, যারা মারা গিয়েছিল কিন্তু পুনরুত্থিত হয়েছে এবং যাদের তারুণ্যপূর্ণ স্বাস্থ্য ও শক্তি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯; ২০:১২, ১৩; ২১:৩, ৪) তারা ‘জীবন-জলের নদীর’ দিকে পরিচালিত হয় ‘তাহা স্ফটিকের ন্যায় উজ্জ্বল, তাহা ঈশ্বরের সিংহাসন হইতে নির্গত হইতেছে।’ এর তীরগুলোতে রয়েছে “জীবন-বৃক্ষ . . . এবং সেই বৃক্ষের পত্র জাতিগণের আরোগ্য নিমিত্তক।” যিহোবা ঈশ্বরের প্রেমপূর্ণ আমন্ত্রণ হল: “যে পিপাসিত, সে আইসুক; যে ইচ্ছা করে, সে বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করুক।”—প্রকাশিত বাক্য ২২:১, ২, ১৭.

এই বৃক্ষগুলো অনন্ত পরমায়ুদাতা কোনো ওষুধ নয় বা চিরযৌবনের ঝরনা নয়, যেগুলোর পিছনে বহু শতাব্দী আগে মধ্যযুগীয় অপরসায়নবিদ ও আবিষ্কারকরা ছুটেছিল। এর পরিবর্তে, এগুলো মানবজাতিকে আদিতে থাকা সিদ্ধ অবস্থায় পুনরুদ্ধার করার জন্য যিশু খ্রিস্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের ব্যবস্থাকে প্রতিনিধিত্ব করে।

পৃথিবীতে বাধ্য মানবজাতিকে অনন্তজীবন দেওয়ার জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পরিবর্তিত হয়নি। সেই উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হবেই, কারণ যিহোবা হলেন অনুগত। গীতসংহিতা ৩৭:২৯ পদ বলে: “ধার্ম্মিকেরা দেশের অধিকারী হইবে, তাহারা নিয়ত তথায় বাস করিবে।” এই প্রতিজ্ঞা আমাদেরকে, মানবজাতির মধ্যে থেকে যাদেরকে স্বর্গীয় অমরত্ব লাভ করার জন্য অনুমোদন করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে এই কথা ঘোষণা করতে পরিচালিত করে: “মহৎ ও আশ্চর্য্য তোমার ক্রিয়া সকল, হে প্রভু ঈশ্বর, সর্ব্বশক্তিমান্‌; ন্যায্য ও সত্য তোমার মার্গ সকল, হে জাতিগণের [“যুগপর্য্যায়ের,” পাদটীকা] রাজন্‌! হে প্রভু, কে না ভীত হইবে? এবং তোমার নামের গৌরব কে না করিবে? কেননা একমাত্র তুমিই সাধু [“অনুগত,” NW]।”—প্রকাশিত বাক্য ১৫:৩, ৪.

আপনি কি মহামূল্য উপহার অনন্তজীবন পেতে চান? যদি চান, তা হলে আপনাকে ‘যুগপর্য্যায়ের রাজনের’ প্রতি নিজেকে অনুগত ও বাধ্য বলে প্রমাণ করতে হবে। আপনাকে যিহোবা এবং যাঁর মাধ্যমে এইরকম এক জীবন সম্ভবপর করা হয়েছে, সেই যিশু খ্রিস্ট সম্বন্ধে জানতে হবে। যেসমস্ত ব্যক্তি ভাল এবং মন্দ সম্পর্কে ঈশ্বরের মানগুলোকে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক হবে, তাদের সকলকে ‘অনন্তজীবনের’ উপহার অনুমোদন করা হবে।—যোহন ১৭:৩.

[পাদটীকা]

^ মৃত্যুর পর কী হয়, সেই সম্বন্ধে পূর্ণ আলোচনার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ৬ অধ্যায় দেখুন।

[৫ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

দীর্ঘদিন ধরে লালিত এক স্বপ্ন

এক মেসোপটেমীয় বীরত্বগাথা গিলগ্যামেশের মহাকাব্য, যেটি সা.কা.পূ. দ্বিতীয় সহস্রাব্দের বলে মনে করা হয়, সেটি এক বীরের চিরযৌবনের অনুসন্ধান সম্বন্ধে বর্ণনা করে। প্রাচীন মিশরীয়রা মৃতদেহ মমি করে রাখত, এই ভেবে যে দেহের যে-অংশকে অমর বলে মনে করা হয়, সেটা আবার তাদের দেহকে ব্যবহার করার জন্য দেহে ফিরে আসবে। সেই অনুযায়ী, কিছু মিশরীয় সমাধিতে তথাকথিত পরলোকে প্রয়োজন হতে পারে এমন সমস্ত জিনিসই থাকত।

মধ্যযুগের চিনা অপরসায়নবিদদের মধ্যে, দেহের অমরত্বে বিশ্বাস অন্ততপক্ষে সা.কা.পূ. অষ্টম শতাব্দীর আর অলৌকিক পানীয়ের মাধ্যমে তা অর্জন করার সম্ভাবনা সা.কা.পূ. চতুর্থ শতাব্দীর বলে মনে হয়। মধ্যযুগের ইউরোপীয় এবং আরবীয় অপরসায়নবিদরা নিজেদের আয়ুকে বাড়ানোর জন্য অনন্ত পরমায়ুদাতা ওষুধের সন্ধান করেছিল ও তা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। তাদের তৈরি কিছু মিশ্রণের মধ্যে আর্সেনিক লবণ, পারদ এবং গন্ধক ছিল। কে জানে এগুলো বানাতে গিয়ে কত জন বিষক্রিয়ায় মারা গিয়েছে!

এ ছাড়া, একসময়কার তথাকথিত ফাউনটেন অভ্‌ ইয়ুথ সম্বন্ধেও বহু রূপকথা প্রচলিত রয়েছে, যে-ঝরনা থেকে যারাই জল পান করত, তাদের সকলের শক্তি পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠত বলে কথিত আছে।

[৭ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

অনন্তজীবন কি একঘেয়ে হবে?

কিছু লোক তর্ক করে যে, অনন্তজীবন একঘেয়ে হবে, “চিরকাল ধরে অর্থহীন অবসর সময়কে শুধু শুধু ব্যয় করা” ছাড়া আর কিছু নয় আর যা অন্তহীনভাবেই ঘটে চলবে। সম্ভবত তারা যে-চিরস্থায়িত্বের বিষয় কল্পনা করে, তা হচ্ছে বর্তমান জীবনযাত্রা ও পরিস্থিতির অন্তহীন ব্যাপ্তি, যেটাকে অনেকের কাছে একঘেয়ে ও অর্থহীন বলে মনে হয়। কিন্তু, ঈশ্বর যে-পরমদেশের পুনর্স্থাপন করবেন, সেখানে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন যে মানুষ “শান্তির বাহুল্যে আমোদ করিবে।” (গীতসংহিতা ৩৭:১১) এই ধরনের এক জীবন মানবজাতিকে যিহোবার সৃষ্টি সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করার এবং যেকোনো বা সব ধরনের আগ্রহজনক দক্ষতা, গবেষণা এবং কাজকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করার জন্য সময় দেওয়ায় সুযোগ করে দেবে, যেগুলো আমরা এখন শুধুমাত্র অর্জন করার স্বপ্ন দেখে থাকি।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জিন বিশেষজ্ঞ, ড. অব্রি ডি গ্রে, যিনি আয়ু বাড়ানোর গবেষণায় নিয়োজিত, তিনি বলেন: “সুশিক্ষিত ব্যক্তিরা ও শিক্ষাকে ব্যবহার করার সময় যাদের রয়েছে এমন ব্যক্তিরা বর্তমানে কখনোই একঘেয়ে বোধ করে না আর তারা এমনকি কখনো কল্পনাও করতে পারে না যে, তারা করতে চায় এমন নতুন নতুন জিনিসের কখনো ঘাটতি হবে।” একইভাবে, ঈশ্বরের অনুপ্রাণিত বাক্য বলে, “ঈশ্বর আদি অবধি শেষ পর্য্যন্ত যে সকল কার্য্য করেন, মনুষ্য তাহার তত্ত্ব বাহির করিতে [পারিবে] না।”—উপদেশক ৩:১১.