এক রাজকীয় একশিলা স্তম্ভ
এক রাজকীয় একশিলা স্তম্ভ
কানাডার সচেতন থাক! লেখক কর্তৃক
শত শত বছর ধরে জেলে ও নাবিকরা এটাকে এক নির্ভরযোগ্য দিকচিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করেছে। কবি, লেখক ও শিল্পীরা এটাকে অবিস্মরণীয় করে তুলেছে। একটা উৎস এই একশিলা স্তম্ভকে “রহস্যময় ও আকর্ষণীয়” হিসেবে বর্ণনা করে। সেন্ট লরেন্স উপসাগরের গ্যাসপে উপদ্বীপের পূর্ব প্রান্তে পার্সে রক বা শিলা স্তম্ভ আটলান্টিক মহাসাগরের ঝলমলে নীল জলে রাজকীয়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। শিলা স্তম্ভটা প্রায় ৪৩৩ মিটার লম্বা, ৯০ মিটার চওড়া ও ৮৮ মিটার উঁচু।
এক সময়, দুঃসাহসী স্থানীয় লোকেরা শিলা স্তম্ভের খাড়া প্রান্তে আরোহণ করত এবং পাখির বাসা থেকে ডিম সংগ্রহ করত। কিন্তু, শিলা স্তম্ভ ও সেইসঙ্গে এতে আশ্রয় নেওয়া পাখিদের সংরক্ষণ এবং সুরক্ষা করার জন্য ১৯৮৫ সালে কুইবেক সরকার পার্সে রক ও এর কাছাকাছি বনাভেনচার দ্বীপকে পাখিদের অভয়ারণ্য বলে ঘোষণা করেছিল। বনাভেনচার দ্বীপ হল বিশ্বের মধ্যে নর্দান গ্যানেট নামে এক প্রকার বৃহদাকার সামুদ্রিক পাখির দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রজনন এলাকা।
কেউ কেউ দাবি করে যে, অনেক আগে পার্সে রক মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল এবং এর হয়তো প্রায় চারটে খিলান (ধনুকাকৃতি অংশ) ছিল। তবে, আজকে শিলা স্তম্ভের সাগরমুখী প্রান্তে একটা খিলান বিদ্যমান, যা ৩০ মিটারেরও বেশি চওড়া। ভাটার সময়ে একটা বালির চড়া শিলা স্তম্ভটাকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে। প্রায় চার ঘন্টার এক বিরতির সময়ে সাহসী ব্যক্তিরা শিলা স্তম্ভের ভিত্তির দিকে হেঁটে যেতে পারে আর তারপর সেই খিলানে পৌঁছানোর জন্য সাগরের জল ছিটকে পড়া স্তম্ভের ভিত্তির পাশ দিয়ে প্রায় ১৫ মিনিট অনেক কষ্টেসৃষ্টে হাঁটতে পারে।
যারা আ্যডভেঞ্চারপ্রিয় তাদের জন্য একটা সতর্কবাণী রয়েছে। একজন দর্শনার্থী, যিনি সাগরের দিকে মুখ করে থাকা সেই খিলানে পৌঁছানোর জন্য পতিত শিলাখণ্ডের ওপর দিয়ে আরোহণ করেছেন, তিনি বলেন: “কয়েক মিনিট পর পর আপনি শিলাখণ্ডগুলো জলের ভিতরে ঢুকে যাওয়ার ফলে ক্ষুদ্রাকার বোমের মতো ভয়ংকর ‘ভুস’ শব্দ শুনতে পাবেন। কিছু শিলা একটা আরেকটার ওপর পড়লে হঠাৎ গুলি ছোঁড়ার মতো শব্দ হয়।”
অনেক দর্শনার্থী যেমন লক্ষ করেছে যে, পার্সে রকের বিস্ময়কর সৌন্দর্য রয়েছে। তা সত্ত্বেও, এটা কেবল আমাদের চমৎকার পৃথিবীর দেওয়া অনেক দর্শনীয় বস্তুর মধ্যে একটা নমুনা মাত্র। সেগুলো কতই না বৈচিত্র্যময় এবং অগণিত! সেগুলো দেখার পর আপনিও হয়তো ‘স্থির থাকিতে, ঈশ্বরের আশ্চর্য্য কার্য্য সকল বিবেচনা করিতে’ পরিচালিত হয়েছেন।—ইয়োব ৩৭:১৪. (g ৪/০৭)
[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
© Mike Grandmaison Photography