কার্পেট কতটা নিরাপদ?
কার্পেট কতটা নিরাপদ?
কার্পেটে মোড়া ঘরের মধ্যে আপনি কতটা সময় কাটান? নিউ সায়েনটিস্ট পত্রিকার একটা রিপোর্ট বলে যে, এর উত্তর খুবই চিন্তার বিষয় হতে পারে, বিশেষ করে শিশুদের জন্য।
সেই পত্রিকা উল্লেখ করেছিল: “আমরা ঘরের ভিতরের পরিবেশে বাইরের চেয়ে ১০ থেকে ৫০ গুণ বেশি বিষাক্ত দূষণে আক্রান্ত হই।” যুক্তরাষ্ট্রের একজন পরিবেশ প্রকৌশলী জন রবার্ট দাবি করেন যে, বিভিন্ন ঘর থেকে সংগ্রহ করা কার্পেটের ধুলার নমুনাগুলোতে বিপদজনক মাত্রায় দূষণের উপাদান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিসা, ক্যাডমিয়াম, পারদ, কীটনাশক এবং কারসিনোজেনিক পলিক্লোরিনেটেড বায়োফিনলস্ (পিসিবিএস) ও পলিসাইক্লিক আ্যরোমেটিক হাইড্রোকার্বনস্ (পিএএইচএস)।
জানা যায় যে, কীটনাশক উপাদান জুতো এবং গৃহপালিত প্রাণীর পায়ে-পায়ে ঘরে আসে এবং কার্পেটের ভিতরে ৪০০ স্তর পর্যন্ত ধুলা জমা হয়ে কীটনাশকের উপাদান বাড়াতে পারে। এটাও বলা হয় যে, এইগুলোর দূষণ বছরের পর বছর চলতে থাকে। যেহেতু কীটনাশক এবং পিএএইচএস হল অনেকটা গ্যাসীয় পদার্থ, তাই এগুলো শূন্যে বাষ্পাকারে থাকে, বাতাসের সঙ্গে ভেসে বেড়ায় আর এরপর তা কার্পেট বা অন্য জিনিসের ওপর স্থায়ীভাবে অবস্থান করে।
ছোট ছেলেমেয়েরা প্রায়ই মেঝেতে খেলা করার সময় তাদের নিজেদের আঙুল মুখের ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়। তাই, বিশেষ করে তারাই এই দূষণে বেশি আক্রান্ত হয়। যেহেতু বাচ্চাদের বিপাকীয় হার বড়দের তুলনায় বেশি, তাই তাদের ওজন কম হওয়া সত্ত্বেও তারা বড়দের চেয়ে বেশি বাতাস টেনে নেয়।
কিছু গবেষক এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, যদি ঘরের ভিতরে বেশির ভাগ জায়গা জুড়ে কার্পেট থাকে, তা হলে এতে ছেলেমেয়েদের হাঁপানি, আ্যলার্জি এবং ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি খুব দ্রুত বেড়ে যেতে পারে। রবার্ট বলেন: “একটা বাড়ির খালি মেঝে বা কিছু কিছু জায়গায় পাপোশ থাকলে সেখানে যতখানি ধুলাবালি থাকে, তারচেয়ে দশগুণ বেশি ধুলা থাকবে যদি পুরো ঘর জুড়ে কার্পেট থাকে।”
রবার্ট পরামর্শ দেন যে, কার্পেটগুলো নিরাপদ রাখার জন্য সরু-নল (নজল) সহ শক্তিশালী ভ্যাকিউম ক্লিনার ব্যবহার করা উচিত। এ ক্ষেত্রে মাসে অন্তত একবার পুরো কার্পেটের যে-অংশ প্রধান দরজার দিকে রয়েছে সেখানকার চার ফুট জায়গা ২৫ বার পরিষ্কার করতে হবে, এরপর কার্পেটের যে-অংশে বেশি হাঁটাচলা করা হয় সেখানে ১৬ বার পরিষ্কার করতে হবে এবং শেষে কার্পেটের অন্যান্য অংশে ৮ বার তা করতে হবে।
আপনি যদি এই সহজ উপায়টা অনুসরণ করেন বা এখানে বলা পদ্ধতির অর্ধেকটাও সপ্তাহে একদিন মেনে চলেন, তা হলে আপনি কার্পেটের ধুলার স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। রবার্ট আরও পরামর্শ দেন: “আপনার ঘরের প্রত্যেকটা দরজায় মোটা পাপোশ রাখুন এবং ঘরে ঢোকার আগে ভাল করে আপনার পা অথবা জুতো সেখানে দুবার মুছে নিন।” (g০২ ৪/২২)