সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

আধ্যাত্মিক জ্ঞানের খোঁজে

দ্যা টাইমস খবরের কাগজ বলে, “শতাব্দীর শেষ যতই এগিয়ে আসছে, ব্রিটিশ লোকেরা তাদের জীবনে আধ্যাত্মিক কিছু পেতে চাইছে আর ধর্ম, জাদুবিদ্যা এবং অলৌকিক বিষয়ের ওপর বই পড়ে তারা তাদের জানার ক্ষুধাকে মেটাচ্ছে।” কালচারাল ট্রেন্ডস্‌-এ প্রকাশিত একটা সমীক্ষা দেখায় যে গত পাঁচ বছরে ধর্মীয় বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৮৩ শতাংশ এবং নবযুগ ও জাদুবিদ্যার ওপর বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই তুলনায় বিজ্ঞান বিষয়ক বই প্রকাশের সংখ্যা কমে গেছে, রসায়ন ও পদার্থবিদ্যা বইয়ের সংখ্যা ২৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই হিসেব নিয়ে চিন্তা করে, এই রিপোর্টের সম্পাদিকা সারা সেলউড বলেছিলেন যে “শতাব্দীর শেষে এসে লোকেরা নিজেকে নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছে এবং জীবনের আসল অর্থ কী তা নিয়ে ভাবছে।” তাহলে, মানচিত্র এবং ভূগোল বইয়ের সংখ্যা কেন ১৮৫ শতাংশ বেড়ে গেছে? তিনি বলেন এটা দেখায় যে মানুষ “বাস্তবতা থেকে পালিয়ে যেতে চাইছে।”

ইউরোপে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছে

আন্তর্জাতিক হেলসিংকি ফেডারেশন “ইউরোপের ১৯টা দেশের বিরুদ্ধে ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগ এনেছে,” ক্যাথলিক ইন্টারন্যাশনাল পত্রিকা বলে। ফেডারেশন বলেছিল যে বিশেষ করে অর্থোডক্স দেশগুলোতে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর চাপ অনেক বেশি। এছাড়াও, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো “পুরনো ধর্মগুলোর প্রভাবকে আরও জোরদার করার জন্য নতুন নতুন আইন তৈরি করছে, অথচ [যিহোবার সাক্ষিদের] মতো ছোট ছোট দলগুলোর কাজে তারা বাধা দিচ্ছে,” ওই পত্রিকা বলেছিল। ফেডারেশনের পরিচালক আ্যরন রোহ্‌ডস আরও বলেছিলেন: “পাশ্চাত্য সমাজ এমন ভাব দেখায় যে বিভিন্ন ‘সম্প্রদায়গুলোর হঠাৎ আক্রমণের’ ভয়েই তারা সংখ্যালঘু ধর্মীয় দলগুলোকে বাধা দিচ্ছে। এই অবস্থা আরও খারাপ হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না লোকেরা ধর্মীয় স্বাধীনতাকে মূল্যবোধ এবং নিয়মের এক অংশ হিসেবে দেখবেন, যে অধিকার সকলের জন্য সমান।”

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি গরম বছর

১৮৬০ সালের পর গত বছর অর্থাৎ ১৯৯৮ সালেই সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছিল, সায়েন্স নিউজ রিপোর্ট করে। হিসেব করা হয়েছিল যে পৃথিবীর ওপরের স্তরের গড় তাপমাত্রা ০·৫৮° সেন্টিগ্রেটের ওপরে গিয়ে পৌঁছায়, যা ১৯৬১ থেকে ১৯৯০ সালের গড় তাপমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। “আবহাওয়া বিশারদরা এমনকি একশভাগের এক ভাগ গরম পড়লেও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হন আর সেই তুলনায় গত বছরের তাপমাত্রা ছিল অনেক অনেক গুণ বেশি,” ওই পত্রিকা বলে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে ১৯৯০ সাল থেকে সাত বছর সবচেয়ে বেশি গরম পড়ার রিপোর্ট করা হয়েছে আর ১৯৮৩ সাল থেকে দশ বার সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছে। ইউ.এস. ন্যাশনাল ওসেনিক আ্যন্ড আ্যটমোসফেরিক এডমিনিস্ট্রেশন এর যোনাথন ওভারপেইক বলেন যে ১২০০ বছরের মধ্যে গত কুড়ি বছরে সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছে। বিশ্বের আবহাওয়া সংস্থা রিপোর্ট করে যে ইউরোপ ও এশিয়ার উত্তরাঞ্চলই শুধু এই গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল। আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল এবং মধ্য রাশিয়ায় জুন মাসের প্রচণ্ড গরমে ১০০ জনের বেশি লোক মারা গেছে এবং প্রচুর অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।

নতুন ‘ঠাণ্ডা লড়াই’

“স্লোভাকীয়রা যেমন খুব আগ্রহ নিয়ে অনেক রকম ও বিভিন্ন স্বাদের আইসক্রিম কেনার জন্য পাগল তেমনই দোকানদারেরা আইসক্রিম দিয়ে তাদের ফ্রিজকে বোঝাই করে রাখার চেষ্টা করছে,” লুবজানার খবরের কাগজ ডেলো বলে। ওই খবরের কাগজ আরও বলে, স্লোভাকীয়দের আইসক্রিম প্রীতি দিন দিন বেড়ে চলেছে—কিছুদিন আগে আইসক্রিম উৎপাদনকারীরা দেখেছেন যে আইসক্রিম বিক্রির হার বছরে ২২ শতাংশ বেড়ে গেছে, যা খুবই উল্লেখযোগ্য। এখানে একজন লোক বছরে ৪.৩ লিটার আইসক্রিম খেয়ে থাকেন কিন্তু এই হারে বেড়ে যেতে থাকলে তা পশ্চিম ইউরোপীয়দের আইসক্রিম খাওয়ার গড় ৫.৫ লিটারকেও ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু, ইউরোপীয়দের আইসক্রিম খাওয়ার প্রতিযোগিতায় সুইডিশরা এখনও এগিয়ে। বাজার বিশেষজ্ঞ দল ইউরোমনিটরের মত অনুযায়ী, একজন সুইডিশ বছরে প্রায় ১৬ লিটার আইসক্রিম খান। এই প্রতিযোগিতায় সারা পৃথিবীর মধ্যে আমেরিকাবাসীরাই এগিয়ে, একজন আমেরিকাবাসী বছরে ২০ লিটার আইসক্রিম খান।

এক “অদৃশ্য রোগ”

এনভারোনমেন্ট নিউজ সার্ভিস রিপোর্ট করে যে “উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায় দেড় কোটি থেকে এক কোটি আশি লাখ শিশুদের রক্তে উচ্চ মাত্রায় সীসা পাওয়া গেছে।” যেমন ভারতে, শিশুর মেধা এবং যে পরিমাণ সীসা তারা শরীরে গ্রহণ করে তার মধ্যে একটা সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। ড. এব্রাহাম জর্জ বলেন যে শিশুরা “তাদের মেধা ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে . . . কারণ সীসা অনেক দিন ধরে শরীরে থাকলে সেগুলো তাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি করে,” দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস রিপোর্ট দেয়। ভারতের শহরগুলোতে সীসা বিষক্রিয়ার প্রধান উৎস হল মোটরগাড়ি, যেগুলোতে এখনও সীসাযুক্ত গ্যাসোলিন ব্যবহার করা হয়। দরিদ্রতা ও ক্ষুধার মতো, সীসা বিষক্রিয়ার দিকে ঠিক ততখানি নজর দেওয়া হয় না বলে ড. জর্জ এটাকে এক “অদৃশ্য রোগ” বলেন।

জল নিয়ে আরেক দুশ্চিন্তা

“এখন খাবার জলে শুধু কীটনাশক পদার্থই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে বিভিন্ন ওষুধও পাওয়া যাচ্ছে,” নিউ সায়েনটিস্ট বলে। বিভিন্ন জায়গা থেকে এই ওষুধগুলো আসে। অদরকারি ওষুধগুলোকে কখনও কখনও টয়লেটে ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া, মূত্রের মাধ্যমেও ওষুধ বের হয়ে যায়। “মানুষ ও পশুপাখির দেহের প্রায় ৩০ থেকে ৯০ শতাংশ আ্যন্টিবায়োটিক মূত্রের মাধ্যমে বের হয়ে যায়,” রয়াল ড্যানিশ স্কুল অফ ফার্মাসির বেন্ট হ্যালিং-সোরেনসেন বলেন। কৃষকেরা সবসময় জমিতে পশুর মূত্র এবং সার ব্যবহার করে। ওষুধগুলো যখন মাটিতে মিশে যায়, তখন সেগুলো হয়তো তাদের প্রথম অবস্থার মতো হতে পারে অথবা মানুষের শরীরে থেকে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে, আগের চেয়ে আরও বেশি প্রতিক্রিয়াশীল অথবা বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে আর তা আরও বেশি জলে দ্রবণীয় হয়ে যেতে পারে। “জলের মধ্যে ওষুধ হল অল্প কয়েক ধরনের রাসায়নিক পদার্থগুলোর মধ্যে একটা যা আমরা দেখতে পাই না,” ব্রিটেনস্‌ এনভায়রনমেন্ট এজেন্সির স্টিভ কিলীন বলেন।

শিশু যৌন নিপীড়ন সম্পর্কে সচেতনতা কি বৃদ্ধি পাচ্ছে?

কারাকাসের খবরের কাগজ এল ইউনিভারসাল অনুসারে, ১৯৮০ সালে ভেনিজুয়েলাতে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হতো কিন্তু আজকে সেই সংখ্যা বেড়ে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৩ জনে গিয়ে পৌঁছেছে। ১৯৮০ সালে যে শিশুরা যৌন নিপীড়নের শিকার হতো তাদের গড় বয়স ছিল ১২ থেকে ১৪ বছর। কিন্তু, আজকে বেশির ভাগ শিশুর বয়সই তিন বছরের নিচে। এইরকম জঘন্য অপরাধ মূলত কারা করে থাকে? আজকে ছেলেধরারা চকোলেটের লোভ দেখিয়ে বাচ্চাদের ধরে নিয়ে যায় এই ধারণা ভুল। এল ইউনিভারসাল ব্যাখ্যা করে যে ৭০ শতাংশ অন্যায়কারী হল আত্মীয় অথবা পরিবারের ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব। অর্ধেকেরও বেশি হল সৎবাবামা এবং সাধারণত যাদের ওপর বাচ্চাদের দেখাশোনার ভার দেওয়া হয় যেমন, বড় ভাই, কাকাতো-মামাতো ভাই অথবা শিক্ষক।

শিক্ষা সংকট

ইংল্যান্ডস্‌ নিউজ আলটিমেটেড রিপোর্ট করে, “উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ১২,৫০,০০,০০০ শিশু, যার মধ্যে বেশির ভাগ কন্যাসন্তানেরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং আরও ১৫ কোটি শিশু লিখতে পড়তে শেখার আগেই স্কুল ছেড়ে দিচ্ছে।” আজকে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ৪ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে ১ জন অর্থাৎ প্রায় ৮৭,২০,০০,০০০ জন লোক নিরক্ষর। এছাড়াও, এই শিক্ষা সংকট আরও বেশি কঠিন আকার নেয় যখন যে দেশগুলোতে নিরক্ষরতার হার খুব বেশি তারা ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে ঋণ নেয়। কেন? কারণ শিক্ষা খাতে যে টাকা খরচ করা হতো সেটাকে প্রায়ই ঋণ শোধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ফলে নিরক্ষরতার চক্র চলতেই থাকে আর দরিদ্রতাও শেষ হয় না।