বিস্ময়কর সুমেরু ত্রয়ী
অনেক দিন ধরে এমনটা মনে করা হতো, সুমেরু ত্রয়ী পাখি সুমেরু থেকে কুমেরু পর্যন্ত যাত্রা করে আবার সেই স্থানে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রায় ৩৫,২০০ কিলোমিটার (২২,০০০ মাইল) পথ পাড়ি দেয়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা দেখায়, এই পাখিরা আসলে এর চেয়ে আরও বেশি পথ পাড়ি দেয়।
একাধিক পাখির দেহে জিওলোকেটরস্ নামে একটা ছোট্ট যন্ত্র লাগিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় কাগজের ক্লিপের মতো ওজনের এই চমৎকার যন্ত্রটার সাহায্যে দেখা যায়, কিছু কিছু পাখি সম্পূর্ণ যাত্রা করার জন্য গড়ে ৯০,০০০ কিলোমিটার (৫৬,০০০ মাইল) পথ পাড়ি দেয় আর এটা আমাদের জানা পরিযায়ী প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ যাত্রা। একটা পাখি প্রায় ৯৬,০০০ কিলোমিটার (৬০,০০০ মাইল) পাড়ি দিয়েছিল! কেন এই পরিসংখ্যান বৃদ্ধি পেয়েছে?
এই পরিযায়ী পাখিরা যেখান থেকেই তাদের যাত্রা শুরু করুক না কেন, তারা ঘোরানো পথে পাড়ি দেয়। ছবিতে যেমন দেখানো হয়েছে, এই পাখিরা যখন সাধারণত আটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে যায়, তখন তাদের পথটা ইংরেজি বর্ণ S-এর মতো দেখায়। এর কারণ কী? এই পাখিরা আসলে মহাসাগরে পরিব্যাপ্ত বায়ু চলাচলকে কাজে লাগায়।
৩০ বছরের জীবনকালে সুমেরু ত্রয়ী প্রায় ২৪,০০,০০০ কিলোমিটার (১৫,০০,০০০ মাইল)-রেরও অধিক পথ পাড়ি দিতে পারে। এই দূরত্ব তিন বা চার বার চাঁদে যাতায়াত করার সমান! একজন গবেষকের মতে, “১০০ গ্রামের [৩.৫ আউন্স] চেয়ে একটু বেশি ওজনের একটা পাখির এই ক্ষমতা আমাদের বোধের অগম্য।” এর চেয়েও বড়ো বিষয় হল, সুমেরু ত্রয়ী উভয় মেরুতেই গরম কাল উপভোগ করে। এই বিষয়ে লাইফ অন আর্থ: এ ন্যাচারাল হিসট্রি নামক একটা বই জানায়, এই পাখিরা “প্রতি বছর অন্য যেকোনো প্রাণীর চেয়ে বেশি সূর্যের আলো” দেখতে পায়।