সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

এটা কি সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট?

পোলিয়া বেরির উজ্জ্বল নীল রং

পোলিয়া বেরির উজ্জ্বল নীল রং

পোলিয়া কনডেনসাটা  গাছের ছোটো বেরি ফল আফ্রিকার সমস্ত জায়গায় পাওয়া যায় আর এই ফলের মতো উজ্জ্বল নীল রং আর কোনো গাছে দেখা যায় না। কিন্তু, এতে কোনো নীল রঙের রঞ্জক পদার্থ নেই। তা হলে, এই আকর্ষণীয় নীল রঙের রহস্য কী?

বিবেচনা করুন: বেরি ফলের খোসায় থাকা কোষের প্রাচীরে দেশলাই বাক্সে সাজানো কাঠির মতো খুব সরু সরু তন্তু রয়েছে। এই তন্তুগুলো একাধিক স্তর তৈরি করে। প্রত্যেকটা স্তর সেটার ঠিক নীচের স্তরের সঙ্গে সামান্য কোণ করে অবস্থিত থাকে, ফলে পর পর উঠে আসা স্তরগুলো ঘুরানো সিড়ির মতো নকশা তৈরি করে। তন্তুগুলোর নিজস্ব কোনো নীল রং নেই। এই তন্তুগুলো যেভাবে সজ্জিত থাকে, সেটার জন্যই এই রং ফুটে ওঠে। আর তাই, কোনো রঞ্জক পদার্থ নয় বরং বেরির গঠনই এই গাঢ়, চকচকে ও মেঘধনুর মতো বর্ণোজ্জ্বল রঙয়ের জন্য দায়ী। বেশিরভাগ কোষকে আপাতদৃষ্টিতে নীল রঙের দেখায়। কিন্তু বিভিন্ন দিক থেকে দেখলে, কয়েকটা আবার সবুজ, গোলাপি কিংবা হলুদ রং বিচ্ছুরিত করে আর এর কারণ হল বিভিন্ন স্তরে ঘটা সুপ্ত পরিবর্তন। এ ছাড়া, খুব ভালোভাবে নিরীক্ষণ করলে দেখা যায়, এদের রং মসৃণ নয় কিন্তু কম্পিউটার স্ক্রিনে থাকা রঙের মতো অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত।

যেহেতু পোলিয়া  বেরির কোনো রঞ্জক পদার্থ নেই, তাই গাছ থেকে পড়ে যাওয়ার পরও এদের রং একইরকম থাকে। আসলে, এক-শো বছর আগে সংগ্রহ করা বেরি, তাজা বেরির মতো একইরকম উজ্জ্বল থাকে! গবেষকদের মতে, যদিও এই ফলে খাওয়ার মতো কোনো শাঁস থাকে না, শুধু বীজ থাকে, তা সত্ত্বেও এই বেরির কাছাকাছি থাকা পাখিদের কাছে এমন এক সংকেত পাঠায়, যেটা তাদের আকর্ষিত করে।

বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, পোলিয়া  বেরির রঞ্জক পদার্থ বিহীন রং ঔজ্জ্বল্য-প্রতিরোধক রং থেকে শুরু করে নকল-প্রতিরোধক কাগজের মতো বিভিন্ন বস্তু তৈরি করতে অনুপ্রাণিত করবে।

আপনি কী মনে করেন? পোলিয়া  বেরির উজ্জ্বল নীল রং কি ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে এসেছে? না কি এটাকে সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে?