সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনি কি জানতেন?

আপনি কি জানতেন?

যিশু কি অপমান করার জন্য “কুকুরশাবকদের” দৃষ্টান্ত ব্যবহার করেছিলেন?

কুকুরশাবক হাতে একটি শিশুর গ্রিক অথবা রোমীয় মূর্তি (খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দী থেকে দ্বিতীয় শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময় নির্মিত)

একসময় যিশু যখন ইস্রায়েল দেশের সীমান্তের বাইরে সুরিয়ার রোমীয় প্রদেশে গিয়েছিলেন, তখন সেখানে এক গ্রিক মহিলা তাঁর কাছে সাহায্যের জন্য বিনতি করেছিলেন। যিশু তার সঙ্গে কথা বলার সময় এমন এক দৃষ্টান্ত ব্যবহার করেছিলেন, যেটা শুনলে মনে হয়, তিনি ন-যিহুদিদের “কুকুরশাবকদের” সঙ্গে তুলনা করেছেন। মোশির নিয়মে কুকুরদের অশুচি প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। (লেবীয় পুস্তক ১১:২৭) কিন্তু, যিশু কি সেই গ্রিক মহিলা ও ন-যিহুদিদের অপমান করার জন্য এই দৃষ্টান্ত ব্যবহার করেছিলেন?

একেবারেই না। যিশু যেমন তাঁর শিষ্যদের কাছে ব্যাখ্যা করেছিলেন, সেই সময় যিহুদিদের সাহায্য করাই তাঁর অগ্রাধিকার ছিল। তাই, এটা বোঝাতে গিয়ে তিনি সেই গ্রিক মহিলাকে বলেছিলেন: “সন্তানদের খাদ্য লইয়া কুকুরদের [“কুকুরশাবকদের,” জুবিলী বাইবেল] কাছে ফেলিয়া দেওয়া ভাল নয়।” (মথি ১৫:২১-২৬; মার্ক ৭:২৬) গ্রিক ও রোমীয়দের কাছে কুকুর ছিল এক প্রিয় পোষা প্রাণী। পোষা কুকুররা তাদের প্রভুদের বাড়িতে থাকত ও সন্তানদের সঙ্গে খেলা করত। আর তাই, ‘কুকুরশাবক’ কথাটা নিঃসন্দেহে এক স্নেহের ছবি তুলে ধরে। সেই গ্রিক মহিলা যিশুর কথার অর্থ বুঝতে পেরে তাঁকে বলেছিলেন: “হাঁ, প্রভু, কেননা কুকুরেরাও আপন আপন কর্ত্তাদের মেজ হইতে যে গুঁড়াগাঁড়া পড়ে, তাহা খায়।” যিশু সেই মহিলার বিশ্বাসের প্রশংসা করেছিলেন এবং তাঁর মেয়েকে সুস্থ করেছিলেন।—মথি ১৫:২৭, ২৮.

প্রেরিত পৌল যখন কিছু সময়ের জন্য সমুদ্র যাত্রা স্থগিত রাখতে বলছিলেন, তখন কি তিনি সঠিক পরামর্শ দিয়েছিলেন?

খোদাই করা একটা বড়ো মালবাহী জাহাজের চিত্র (প্রথম শতাব্দী)

প্রেরিত পৌলকে নিয়ে যে-জাহাজটা ইতালির দিকে রওনা দিয়েছিল, সেটাকে প্রতিকূল বাতাসের সঙ্গে সংঘর্ষ করতে হচ্ছিল। এক বন্দরে থাকাকালীন পৌল বাকি যাত্রা কিছুদিনের জন্য স্থগিত রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। (প্রেরিত ২৭:৯-১২) এই পরামর্শ দেওয়ার পিছনে কি কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছিল?

প্রাচীন কালের নাবিকরা ভালোভাবেই জানত, ভূমধ্যসাগরে শীতের সময় যাত্রা করা খুবই বিপদজনক। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে মার্চের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সমুদ্রযাত্রা বন্ধ করে দেওয়া হতো। কিন্তু, যে-যাত্রার কথা পৌল উল্লেখ করেছেন, সেটা সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে ঘটেছিল। চতুর্থ শতাব্দীর রোমীয় লেখক ভেজেসিয়াস এপিটোম অভ্‌ মিলিটারি সায়েন্স নামক বইয়ে সমুদ্রযাত্রা সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানান: “কিছু মাস সমুদ্রযাত্রার পক্ষে খুবই অনুকূল ছিল, কিছু মাস যাত্রা করার পক্ষে অনিশ্চিত ছিল এবং বাকি মাসগুলোতে যাত্রা করা অসম্ভব ছিল।” ভেজিসিয়াসের মতে মে মাসের ২৭ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখ পর্যন্ত সমুদ্রযাত্রা করা নিরাপদ ছিল কিন্তু সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে নভেম্বরের ১১ তারিখ এবং মার্চ ১১ তারিখ থেকে মে মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত সময়সীমা সমুদ্রযাত্রার পক্ষে অনিশ্চিত বা বিপদজনক ছিল। পৌল ছিলেন একজন দক্ষ ভ্রমণকারী আর তাই এতে কোনো সন্দেহ নেই, তিনি এই তথ্যগুলো জানতেন। জাহাজের চালক ও মালিকও সম্ভবত এই বিষয়ে জানতেন কিন্তু তারা পৌলের পরামর্শকে অবজ্ঞা করেছিলেন। শেষপর্যন্ত জাহাজডুবি ঘটেছিল।—প্রেরিত ২৭:১৩-৪৪.