সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঘৃণা চিরকালের জন্য শেষ হয়ে যাবে!

ঘৃণা চিরকালের জন্য শেষ হয়ে যাবে!

আমরা আমাদের মন থেকে ঘৃণা মুছে ফেলতে পারলেও অন্যেরা কেমন মনোভাব দেখাবে এবং কেমন আচরণ করবে, তা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আর নির্দোষ লোকেরা ঘৃণার শিকার হয়েই চলেছে। তাহলে, কেউ কি ঘৃনাকে চিরকালের জন্য শেষ করতে পারবে?

হ্যাঁ, একমাত্র যিহোবা ঈশ্বরই পুরোপুরিভাবে এবং সবসময়ের জন্য এই ঘৃণার চক্রকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবেন। আর তিনি যে তা করবেন, সেটাই বাইবেল জানায়।—হিতোপদেশ ২০:২২.

ঈশ্বর ঘৃণার মূল কারণগুলো দূর করে দেবেন

  1. ১. শয়তান দিয়াবল। শয়তান হল এক বিদ্রোহী স্বর্গদূত আর আজকের জগতে যত ঘৃণা রয়েছে, সেটার জন্য সে-ই দায়ী। শয়তানকে এবং যারা তার মতো অন্যদের ঘৃণা করে, তাদের সবাইকে ঈশ্বর ধ্বংস করে দেবেন।—গীতসংহিতা ৩৭:৩৮; রোমীয় ১৬:২০.

  2. ২. শয়তানের অধীনে থাকা ঘৃণায় পরিপূর্ণ এই জগৎ। ঈশ্বর এই জগতে থাকা সমস্ত খারাপ বিষয়কে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে, দুষ্ট রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা, যারা লোকদের মধ্যে ঘৃণা জাগিয়ে তোলে। এ ছাড়া, ঈশ্বর সমস্ত বাণিজ্যিক ব্যবস্থাও পুরোপুরি নষ্ট করে দেবেন, যেগুলোর মাধ্যমে লোকেরা নিজেদের স্বার্থপূরণ করে, অন্যদের ঠকায় এবং দুর্নীতি করে চলে।—২ পিতর ৩:১৩.

  3. ৩. মানুষের অসিদ্ধতা। বাইবেল জানায় যে, সমস্ত মানুষের মধ্যেই অসিদ্ধতা বা ভুল করার প্রবণতা রয়েছে। এই কারণেই তাদের মধ্যে ভুল চিন্তাভাবনা চলে আসে আর তারা ভুল কাজ করে ফেলে। (রোমীয় ৫:১২) অসিদ্ধতার কারণেই লোকেরা নিজেদের মনে ঘৃণা পুষে রাখে এবং কথায় ও কাজে অন্যদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে। ঈশ্বর মানুষের মধ্যে থাকা ভুল কাজ করার সমস্ত ধরনের প্রবণতাকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবেন, যাতে ঘৃণা তাদের মন থেকে চিরকালের জন্য মুছে যায়।—যিশাইয় ৫৪:১৩.

বাইবেল প্রতিজ্ঞা করে, সারা জগতে ঘৃণা আর থাকবে না

  1. ১. কারো প্রতি অন্যায় করা হবে না। ঈশ্বরের রাজ্য পৃথিবীর উপর শাসন করবে। এটা স্বর্গের এক সরকার, যা চিরকালের জন্য ন্যায়বিচার নিয়ে আসবে। (দানিয়েল ২:৪৪) বৈষম্য ও অসহিষ্ণুতা বলে আর কিছু থাকবে না। এখন লোকেরা যতই অবিচারের মুখোমুখি হোক না কেন, ঈশ্বর তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করবেন।—লূক ১৮:৭.

  2. ২. সবাই শান্তিতে বাস করবে। যুদ্ধ ও অশান্তি থাকবে না আর সেগুলোর কারণে কাউকে কষ্ট ভোগও করতে হবে না। (গীতসংহিতা ৪৬:৯) সেই সময় পৃথিবী এক সুরক্ষিত জায়গায় পরিণত হবে কারণ সেখানে শুধুমাত্র শান্তিপ্রিয় লোকেরা বাস করবে।—গীতসংহিতা ৭২:৭.

  3. ৩. সবাই এক মনোরম পরিবেশে চিরকাল বাস করবে। পৃথিবীর সমস্ত লোক তখন একে অন্যের প্রতি প্রকৃত প্রেম দেখাবে। (মথি ২২:৩৯) কারোরই এমন কোনো স্মৃতির কথা মনে পড়বে না, যেটার কারণে তাদের কষ্ট হয়। (যিশাইয় ৬৫:১৭) সেই সময় সমস্ত মানবজাতির মধ্য থেকে ঘৃণা মুছে যাবে আর তারা “শান্তির বাহুল্যে আমোদ করিবে।”—গীতসংহিতা ৩৭:১১.

আপনিও কি এমনই এক জগতে থাকতে চান? সত্যি বলতে, বর্তমানেও অনেক লোক বাইবেলের নীতিগুলো শিখছে এবং কাজে লাগাচ্ছে, যাতে তারা ঘৃণা কাটিয়ে উঠতে পারে। (গীতসংহিতা ৩৭:৮) আর এটাই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা লক্ষ লক্ষ যিহোবার সাক্ষি করছে। তারা ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি ও পটভূমি থেকে আসা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে পরিবারের মতোই প্রেম ও একতা রয়েছে।—যিশাইয় ২:২-৪.

যিহোবার সাক্ষিরা শিখেছে যে, কীভাবে অবিচার ও ভেদাভেদের সঙ্গে মোকাবিলা করা যায় আর তারা আপনাকে তা জানাতে পেরে খুশি হবে। আপনিও যখন সেই সম্বন্ধে শিখবেন, তখন আপনি ধীরে ধীরে ঘৃণার পরিবর্তে প্রেম গড়ে তুলতে পারবেন। আপনি এও জানতে পারবেন যে, অন্যেরা অকৃতজ্ঞ হলেও কিংবা ঘৃণা দেখালেও কীভাবে সমস্ত ধরনের লোকের প্রতি সদয় হওয়া যায়। এভাবে, আপনি আনন্দিত হতে পারবেন এবং সবার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক আরও ভালো হবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আপনি শিখবেন, ঈশ্বরের রাজ্যে থাকার জন্য আপনি কী করতে পারেন, যেখানে ঘৃণা আর থাকবে না।—গীতসংহিতা ৩৭:২৯.

^ অনু. 15 কিছু ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে।