আপনার মনের বিরুদ্ধে করা যুদ্ধে জয়ী হোন
আপনাকে আক্রমণ করা হচ্ছে! আর আপনার প্রধান শত্রু শয়তান আপনার বিরুদ্ধে খুবই বিপদজনক এক অস্ত্র ব্যবহার করছে। সেটা কী? অপপ্রচার! এটা এমন একটা অস্ত্র, যেটা আপনার শরীরকে নয় বরং আপনার মনকে আক্রমণ করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে।
প্রেরিত পৌল শয়তানের অপপ্রচারের বিপদ সম্বন্ধে সতর্ক ছিলেন কিন্তু তার সমস্ত সহখ্রিস্টান সেই বিষয়ে সতর্ক ছিল না। উদাহরণ স্বরূপ, করিন্থের কোনো কোনো ব্যক্তির নিজেদের উপর অতিরিক্ত আস্থা ছিল। তারা মনে করেছিল, তারা সত্যে এতটাই দৃঢ় যে, তারা কখনো পড়ে যাবে না। (১ করি. ১০:১২) তাই, পৌল এই সতর্কবাণী দিয়েছিলেন: আমার “আশঙ্কা হইতেছে, পাছে সর্প যেমন আপন ধূর্ত্ততায় হবাকে প্রতারণা করিয়াছিল, তেমনি তোমাদের মন খ্রীষ্টের প্রতি সরলতা ও শুদ্ধতা হইতে ভ্রষ্ট হয়।”—২ করি. ১১:৩.
সহখ্রিস্টানদের প্রতি পৌলের গভীর চিন্তা দেখায় যে, আমাদের কখনোই আত্মতুষ্টির মনোভাব গড়ে তোলা উচিত নয়। আপনি যদি আপনার মনের বিরুদ্ধে করা যুদ্ধে জয়ী হতে চান, তা হলে আপনাকে অবশ্যই অপপ্রচারের বিপদ সম্বন্ধে অবগত হতে হবে এবং সেটা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।
অপপ্রচার—এটা কতটা বিপদজনক?
অপপ্রচার কী? এই প্রসঙ্গে, অপপ্রচার হল লোকেদের চিন্তাভাবনা ও কাজকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পক্ষপাতী অথবা ভ্রান্তিকর তথ্য ব্যবহার করা। কেউ কেউ মনে করে যে, অপপ্রচার হল “মিথ্যা বলা, তথ্য বিকৃত করা, ছলনা করা, চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণ করা, [এবং] মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার” সমান এবং তারা এটাকে “নীতিহীন, ক্ষতিকর ও অন্যায্য কলাকৌশলের” সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হিসেবে দেখে থাকে।—অপপ্রচার ও প্ররোচনা (ইংরেজি)।
অপপ্রচার কতটা বিপদজনক? এটা গোপনে প্রভাব বিস্তার করে—ঠিক কোনো অদৃশ্য, গন্ধহীন বিষাক্ত গ্যাসের মতো—আর ধীরে ধীরে আপনার অনুভূতির উপর প্রভাব ফেলে। ভ্যান্স প্যাকার্ড নামে আচার-ব্যবহারের একজন বিশেষজ্ঞ লক্ষ করেছেন, যেহেতু আমরা হয়তো অপপ্রচারকে বিপদজনক বলে মনে না-ও করতে পারি, তাই “আমাদের মধ্যে অনেকেই, আমরা যতটা বুঝতে পারি, তার চেয়ে আরও
বেশি প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছি।” একজন পণ্ডিত ব্যক্তির কথা অনুযায়ী, অপপ্রচারের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিভিন্ন পুরুষ ও নারী “খুব সহজেই সবচেয়ে অযৌক্তিক ও বিপদজনক কাজ করতে পরিচালিত” হয়েছে যেমন, ‘গণহত্যা, যুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা অথবা অন্যান্য অনেক ধরনের যুক্তিহীন কাজ।’—সহজেই পরিচালিত—অপপ্রচারের এক ইতিহাস (ইংরেজি)।যদি সাধারণ মানুষ তাদের অপপ্রচারের মাধ্যমে আমাদের প্রতারিত করতে পারে, তা হলে শয়তান নিশ্চয়ই আরও কত কিছুই-না করতে পারে! শয়তান সেইসময় থেকে মানুষের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে আসছে, যখন প্রথম মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছিল। বর্তমানে, “সমস্ত জগৎ” শয়তানের ক্ষমতার অধীনে রয়েছে। সে এটার যেকোনো অংশকে তার মিথ্যা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারে। (১ যোহন ৫:১৯; যোহন ৮:৪৪) ‘লোকেদের মন অন্ধ’ করার ক্ষেত্রে শয়তান এতটাই কার্যকারী হয়েছে যে, এখন সে “সমস্ত নরলোকের ভ্রান্তি জন্মায়।” (২ করি. ৪:৪; প্রকা. ১২:৯) কীভাবে আপনি শয়তানের অপপ্রচারের প্রতিরোধ করতে পারেন?
আপনার প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করুন
অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার বিষয়ে যিশু এই সাধারণ আইনটা দিয়েছিলেন: ‘সত্য জানুন, এবং সেই সত্য আপনাদিগকে স্বাধীন করিবে।’ (যোহন ৮:৩১, ৩২) কিন্তু, যেহেতু একটা যুদ্ধে প্রায়ই প্রথমে সত্যকে আক্রমণ করে নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়, তাই যুদ্ধের মধ্যে থাকা যেকোনো সৈনিকের মতো আপনারও বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য তথ্য লাভ করার একটা উৎসের প্রয়োজন হবে, যাতে শত্রুপক্ষ আপনাকে প্রতারিত করার জন্য আপনার মনকে প্রভাবিত করতে না পারে। যিহোবা এই উৎস জুগিয়েছেন। বাইবেলের পাতায় পাতায় আপনি শয়তানের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত বিষয় খুঁজে পাবেন।—২ তীম. ৩:১৬, ১৭.
অবশ্য, অপপ্রচারের সবচেয়ে বড়ো উৎস শয়তান এই বিষয়টা জানে। তাই, সে বাইবেল পড়া ও অধ্যয়ন করার বিষয়ে আমাদের নিরুৎসাহিত করার জন্য তার বিধিব্যবস্থাকে ব্যবহার করে। তার এই প্রতারণামূলক চাতুরীর ফাঁদে পা দেবেন না! (ইফি. ৬:১১) সত্যের বিষয়ে ‘[“পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে,” NW] বুঝিতে সমর্থ হোন।’ (ইফি. ৩:১৮) এর জন্য আপনাকে প্রচুর প্রচেষ্টা করতে হবে। কিন্তু, লেখক নোয়াম চামস্কির দ্বারা বলা এই মৌলিক সত্যটা মনে রাখবেন: “কেউই আপনার মস্তিষ্কে সত্য ঢুকিয়ে দেবে না। সত্য হল এমন কিছু, যেটা আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে খুঁজে বের করতে হবে।” তাই, অধ্যবসায়ের সঙ্গে ‘প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করিবার’ মাধ্যমে “ব্যক্তিগতভাবে” সত্য ‘খুঁজে বের করুন।’—প্রেরিত ১৭:১১.
মনে রাখবেন, শয়তান চায় না যেন আপনি কোনো বিষয় নিয়ে স্পষ্টভাবে চিন্তা করেন অথবা ভালোভাবে যুক্তি করেন। কেন? কারণ একটা উৎস যেমন বলে, অপপ্রচার সেইসময় ‘সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যখন লোকেদের সতর্কতার সঙ্গে চিন্তা করার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হয়।’ (বিংশ শতাব্দীর প্রচারমাধ্যম ও সমাজ, ইংরেজি) তাই, হিতো. ১৪:১৫) ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া পরিণামদর্শিতা বা চিন্তা করার ক্ষমতা এবং যুক্তি করার ক্ষমতা ব্যবহার করে সত্যকে নিজের করে নিন।—হিতো. ২:১০-১৫; রোমীয় ১২:১, ২.
আপনি যা শোনেন, তা কখনোই চিন্তা না করে অথবা অন্ধের মতো বিশ্বাস করবেন না। (বিভেদ জন্মানোর এবং পরাজিত করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন
সামরিক যুদ্ধের পরিকল্পনাকারী ব্যক্তিরা অপর পক্ষের মনোবল ভেঙে ফেলার এবং তাদের লড়াই করার উদ্যোগ দুর্বল করে দেওয়ার জন্য অপপ্রচারের ব্যবহার করতে পারে। তারা হয়তো শত্রুপক্ষের সৈনিকদের নিজেদের মধ্যে লড়াই করার জন্য অথবা তাদের সৈন্যদল থেকে পৃথক হওয়ার জন্য প্ররোচিত করতে পারে। একজন জার্মান জেনারেলের কথা অনুযায়ী, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজিত হওয়ার একটা কারণ ছিল অপপ্রচার। তিনি বলেছিলেন, লোকেরা অপপ্রচারের মাধ্যমে এতটাই প্রভাবিত হয়েছিল যে, মনে হয়েছিল যেন তারা সেটার দ্বারা সম্মোহিত হয়েছে। বর্তমানে, খ্রিস্টানদের একতা নষ্ট করে ফেলার জন্য শয়তান একইরকম পদ্ধতি ব্যবহার করে। উদাহরণ স্বরূপ, সে ভাই-বোনদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। অথবা ভাই-বোনেরা যাতে সংগঠন ছেড়ে চলে যায়, তাই সে তাদের এমনটা মনে করতে পরিচালিত করে যে, যিহোবার সংগঠন অন্যায্য বা ভুল কিছু করেছে।
শয়তানের ছলনার দ্বারা প্রতারিত হবেন না! ঈশ্বরের বাক্যে প্রাপ্ত নির্দেশনা অনুসরণ করুন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনার ভাই-বোনদের সঙ্গে একতা বজায় রাখার বিষয়ে বাইবেল আপনাকে উৎসাহিত করে যে, ‘পরস্পর ক্ষমা করে’ চলুন এবং বিতর্কের বিষয়গুলো দ্রুত মিটিয়ে নিন। (কল. ৩:১৩, ১৪; মথি ৫:২৩, ২৪) এটি আমাদের দৃঢ়ভাবে সাবধান করে যেন আমরা মণ্ডলী থেকে নিজেদের পৃথক না করি। (হিতো. ১৮:১) শয়তানের অপপ্রচার প্রতিরোধ করার বিষয়ে আপনার ক্ষমতাকে পরীক্ষা করুন। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: ‘শেষ বার যখন আমি এইরকম একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলাম, তখন কোন বিষয়টা আমার চিন্তাভাবনাকে পরিচালিত করেছিল? জগতের আত্মা না কি ঈশ্বরের আত্মা?’—গালা. ৫:১৬-২৬; ইফি. ২:২, ৩.
আপনার আস্থাকে দুর্বল হয়ে যেতে দেবেন না
একজন সৈনিকের যদি তার নেতার প্রতি আনুগত্য দুর্বল হয়ে পড়ে, তা হলে তিনি ভালোভাবে লড়াই করতে পারবেন না। তাই, যারা অপপ্রচার ছড়ায়, তারা একজন সৈনিক ও একজন সেনাপতির মধ্যে থাকা আস্থা ও নির্ভরতার বন্ধনকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। তারা এইরকম অপপ্রচার ব্যবহার করতে পারে যেমন: “তোমাদের নেতাদের উপর আস্থা রাখা যায় না!” এবং “নেতাদের কথা শুনে বিপর্যয়ের দিকে পরিচালিত হোয়ো না!” এই ধরনের অপপ্রচারকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য তারা চাতুরীর সঙ্গে সেই নেতাদের যেকোনো ভুলকে স্বীয়স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে। শয়তান ঠিক এমনটাই
করে থাকে। সে যিহোবার জোগানো নেতৃত্বের প্রতি আপনার আস্থাকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করার বিষয়ে কখনো হাল ছেড়ে দেয় না।প্রতিরোধের জন্য আপনি কী করতে পারেন? যিহোবার সংগঠনের সঙ্গে লেগে থাকার এবং তাঁর জোগানো নেতৃত্বকে অনুগতভাবে সমর্থন করার বিষয়ে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হোন—তা যেকোনো অসিদ্ধতাই দেখা দিক না কেন। (১ থিষল. ৫:১২-১৪ক) ধর্মভ্রষ্ট ব্যক্তিরা এবং ছলনাকারী ব্যক্তিরা সংগঠনকে আক্রমণ করতে পারে। (তীত ১:১০) এমনকী, তাদের কথাকে সত্য বলে মনে হলেও “মনের স্থিরতা হইতে বিচলিত” হবেন না। (২ থিষল. ২:২) যুবকবয়সি তীমথিয়কে যে-পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, সেটা অনুসরণ করুন। আপনি যে-সত্য শিখেছেন, সেটাকে ধরে রাখুন এবং আপনি কোথা থেকে সেটা শিখেছেন, তা মনে রাখুন। (২ তীম. ৩:১৪, ১৫) নিশ্চিতভাবেই এমন অনেক প্রমাণ রয়েছে, যেগুলো দেখায় যে, সত্যের পথে আমাদের পরিচালিত করার জন্য প্রায় এক-শো বছর ধরে যিহোবা যে-মাধ্যম ব্যবহার করে আসছেন, সেটার উপর আপনি আস্থা রাখতে পারেন।—মথি ২৪:৪৫-৪৭; ইব্রীয় ১৩:৭, ১৭.
আতঙ্কিত করার মতো চাতুরীগুলোর দ্বারা দুর্বল হবেন না
মনে রাখবেন, শয়তান যে সবসময় সূক্ষ্ম উপায়ে অপপ্রচার ছড়ায়, এমন নয়। কখনো কখনো সে আতঙ্কিত করার মতো চাতুরী ব্যবহার করে, যেটা হল “সমস্ত ধরনের অপপ্রচারের মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো একটা ধরন।” (সহজেই পরিচালিত—অপপ্রচারের এক ইতিহাস) উদাহরণ স্বরূপ, ব্রিটিশ অধ্যাপক ফিলিপ এম. টেলার লিখেছিলেন, অশূরীয়রা “অপপ্রচারের সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কিত করার পন্থা ব্যবহার করে” তাদের শত্রুদের উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল। শয়তান লোকভয়, তাড়নার ভয়, মৃত্যুভয় এবং অন্য যেকোনো ধরনের নেতিবাচক ভয় ব্যবহার করে আপনার উপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করবে। সে এই বিষয়েও চেষ্টা করবে, যেন আপনি যিহোবাকে সেবা করা থেকে পিছিয়ে যান।—যিশা. ৮:১২; যির. ৪২:১১; ইব্রীয় ২:১৫.
শয়তানকে আপনার মনোবল দুর্বল করে দেওয়ার অথবা আপনার বিশ্বস্ততা ভেঙে ফেলার জন্য ভয়কে ব্যবহার করার সুযোগ দেবেন না। যিশু বলেছিলেন: “যাহারা শরীর বধ করিয়া পশ্চাৎ আর কিছু করিতে পারে না, তাহাদিগকে ভয় করিও না।” (লূক ১২:৪) যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, তিনি আপনাকে সুরক্ষিত রাখবেন, “পরাক্রমের উৎকর্ষ [“অসাধারণ মহাশক্তি,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন]” দেবেন এবং ভয়ের মাধ্যমে আপনাকে বশীভূত করার বিষয়ে শয়তানের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সাহায্য করবেন। তাঁর এই প্রতিজ্ঞাগুলোর উপর পূর্ণ আস্থা রাখুন।—২ করি. ৪:৭-৯; ১ পিতর ৩:১৪.
অবশ্য, আপনি হয়তো ভীতিজনক ও মনোবল দুর্বল করে দেওয়ার মতো ঘটনার মুখোমুখি হতে পারেন। কিন্তু, যিহোশূয়কে বলা যিহোবার এই উৎসাহজনক কথাগুলো মনে রাখবেন: “তুমি বলবান হও ও সাহস কর, মহাভয়ে ভীত কি নিরাশ হইও না; কেননা তুমি যে কোন স্থানে যাও, সেই স্থানে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সহবর্ত্তী।” (যিহো. ১:৯) যদি উদ্বিগ্নতার সম্মুখীন হন, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার সমস্ত চিন্তার বিষয় নিয়ে প্রার্থনায় যিহোবার শরণাপন্ন হোন। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, ‘ঈশ্বরের শান্তি আপনার হৃদয় ও মন রক্ষা করিবে,’ যাতে আপনি শয়তানের সমস্ত অপপ্রচার প্রতিরোধ করার শক্তি লাভ করতে পারেন।—ফিলি. ৪:৬, ৭, ১৩.
আপনার কি ঈশ্বরের লোকেদের বিরুদ্ধে করা অশূরীয় বার্তাবাহক রব্শাকির অপপ্রচারের কথা মনে আছে? তিনি আসলে বলেছিলেন: ‘কোনো কিছুই অশূরীয়দের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না। তোমাদের ঈশ্বর যিহোবাও তোমাদের জন্য কিচ্ছু করতে পারবে না।’ তিনি জোরের সঙ্গে আরও বলেছিলেন: ‘যিহোবা নিজে আমাদের এই দেশ ধ্বংস করতে বলেছেন।’ উত্তরে যিহোবা কী বলেছিলেন? “তুমি যাহা শুনিয়াছ, ও যাহা বলিয়া অশূর-রাজের দাসেরা আমার নিন্দা করিয়াছে, সেই সকল কথায় ভীত হইও না।” (২ রাজা. ১৮:২২-২৫; ১৯:৬) তিনি একজন স্বর্গদূত পাঠিয়ে এক রাতের মধ্যে ১,৮৫,০০০ অশূরীয়কে বিনষ্ট করেছিলেন।—২ রাজা. ১৯:৩৫.
বিজ্ঞ হোন—সবসময় যিহোবার কথা শুনুন
আপনি কি কখনো এমন একটা সিনেমা দেখেছেন, যেখানে আপনি দর্শক হিসেবে স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছিলেন যে, কারো সঙ্গে ছলনা করা হচ্ছে এবং তার চিন্তাভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে? আপনি কি তখন মনে মনে বলছিলেন: ‘ওদের কথায় বিশ্বাস কোরো না! ওরা মিথ্যা কথা বলছে!’ কল্পনা করুন, স্বর্গদূতেরাও আপনাকে একই বিষয় বলছেন: “শয়তানের মিথ্যার দ্বারা প্রতারিত হবেন না!”
তাই, শয়তানের অপপ্রচারের প্রতি কান দেবেন না। (হিতো. ২৬:২৪, ২৫) যিহোবার কথা মন দিয়ে শুনুন এবং আপনার সমস্ত কাজে তাঁর উপর আস্থা রাখুন। (হিতো. ৩:৫-৭) তাঁর এই প্রেমময় আবেদনের প্রতি সাড়া দিন: “বৎস, জ্ঞানবান হও; আমার চিত্তকে আনন্দিত কর।” (হিতো. ২৭:১১) এগুলো করার মাধ্যমে আপনি আপনার মনের বিরুদ্ধে করা যুদ্ধে জয়ী হতে পারবেন!