যিহোবার সাক্ষিরা কি পুরাতন নিয়ম বিশ্বাস করে?
অবশ্যই। যিহোবার সাক্ষিরা বিশ্বাস করে, সম্পূর্ণ বাইবেল “ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে এবং তা ... দরকারী।” (২ তীমথিয় ৩:১৬; বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন।) সম্পূর্ণ বাইবেল দুটো অংশ নিয়ে গঠিত, যা সাধারণত পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়ম নামে পরিচিত। যিহোবার সাক্ষিরা বাইবেলের এই অংশগুলোকে ইব্রীয় শাস্ত্র ও খ্রিস্টান গ্রিক শাস্ত্র বলে অভিহিত করে থাকে। এভাবে, আমরা এই ধারণা দেওয়া থেকে বিরত থাকি যে, বাইবেলের কোনো কোনো অংশ সেকেলে অথবা কম গুরুত্বপূর্ণ।
কেন খ্রিস্টানদের পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়ম দুটোরই প্রয়োজন?
ঐশিক অনুপ্রেরণায়, খ্রিস্টান প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “পূর্ব্বকালে যাহা যাহা লিখিত হইয়াছিল, সে সকল আমাদের শিক্ষার নিমিত্তে লিখিত হইয়াছিল।” (রোমীয় ১৫:৪) তাই, ইব্রীয় শাস্ত্রে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে, এই শাস্ত্র সেই সময়কার প্রাসঙ্গিক ইতিহাস সম্বন্ধে জানায় ও ব্যাবহারিক পরামর্শ জোগায়।
প্রাসঙ্গিক ইতিহাস। ইব্রীয় শাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে, সৃষ্টি এবং মানবজাতির পাপে পতিত হওয়ার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ। সেই বিবরণ যদি না থাকত, তাহলে আমরা এই প্রশ্নগুলোর সন্তোষজনক উত্তর পেতাম না: যেমন, আমরা কোথা থেকে এসেছি? কেন মানুষ মারা যায়? (আদিপুস্তক ২:৭, ১৭) এ ছাড়া, ইব্রীয় শাস্ত্র সেইসমস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যিহোবার আচরণের বিবরণগুলো লিপিবদ্ধ করে রেখেছে, যারা ঠিক আমাদের মতো আনন্দ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছিল।—যাকোব ৫:১৭.
ব্যাবহারিক পরামর্শ। বাইবেলের হিতোপদেশ এবং উপদেশক বইয়ে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞা রয়েছে, যা সবসময়ের জন্য প্রযোজ্য আর এই বই দুটো ইব্রীয় শাস্ত্রের অংশ। এই বইগুলোতে বিভিন্ন পরামর্শ রয়েছে যেমন, কীভাবে সুখী পারিবারিক জীবন উপভোগ করা যায় (হিতোপদেশ ১৫:১৭), কীভাবে কাজের প্রতি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টি রাখা যায় (হিতোপদেশ ১০:৪; উপদেশক ৪:৬), কীভাবে যুবক-যুবতীরা নিজেদের যৌবনকালে সবচেয়ে উত্তম বিষয় লাভ করতে পারে (উপদেশক ১১:৯–১২:১)।
এ ছাড়া, তোরাহ্তে (বাইবেলের প্রথম পাঁচটা বই) লিপিবদ্ধ মোশির ব্যবস্থা বা আইন অধ্যয়ন করে আমরা উপকার পেতে পারি। যদিও, এই আইন খ্রিস্টানদের প্রতি প্রযোজ্য নয়, তবুও এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলো রয়েছে, যেগুলো আমাদেরকে জীবনে সুখ খুঁজে পাওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে।—লেবীয় পুস্তক ১৯:১৮; দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৫-৭.