এটা কি সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট?
ড্যান্ডেলিয়ন বীজের ভেসে বেড়ানো
বাতাসে ভেসে বেড়ায় এমন সমস্ত কিছুর মধ্যে ড্যান্ডেলিয়ন বীজ হল সবচেয়ে সেরা। ড্যান্ডেলিয়নের উপর দিয়ে যখন বাতাস বয়ে যায়, তখন এর ছোটো ছোটো বীজ ছোটো ছোটো প্যারাস্যুটের মতো ভেসে বেড়ায়। যদিও এই বীজ মাটির কাছাকাছি বাতাসে ভাসতে থাকে কিন্তু বেশ কিছু বীজ প্রায় ১ কিলোমিটার (০.৬ মাইল) বা তার চেয়ে বেশি দূরত্ব পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। কেন এই বীজগুলো এতক্ষণ বাতাসে ভেসে থাকতে পারে? সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, এই বীজের ভেসে বেড়ানোর ক্ষমতা এবং স্থিরতা একটা সাধারণ প্যারাস্যুটের ক্ষমতার চেয়ে চারগুণ বেশি।
বিবেচনা করুন: প্রত্যেকটা বীজ এক একটা বোঁটার সঙ্গে লাগানো থাকে, যেগুলো সূক্ষ্ম রেশমী চুলের মতো আর এগুলোকে পাপ্পুস বলে। এই পাপ্পুস এক ধরনের প্যারাস্যুট হিসেবে কাজ করে, যেটা এই বীজগুলোকে বাতাসে ভেসে থাকতে সাহায্য করে।
কিন্তু পাপ্পুসের রোঁয়া থেকে যে-টান সৃষ্টি হয়, শুধু সেটাই নয় কিন্তু এর ভেসে বেড়ানোর ক্ষেত্রে আরও বেশি কিছু জড়িত রয়েছে। যখন এই রেশমী রোঁয়ার চারপাশ এবং এর মধ্যে দিয়ে বাতাস বয়ে যায়, তখন উপরের বাতাসে একটা আবর্ত ঘূর্ণি বা এডির সৃষ্টি হয়। এর ফলে ঘূর্ণির ভিতরে একটা নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়, যেটা পাপ্পুসকে উপরের দিকে টেনে ধরে থাকে আর সেটাকে দ্রুত মাটিতে পড়তে দেয় না।
বাস্তবিকভাবে পাপ্পুসের রোঁয়া এত সুন্দর ভাবে সাজানো, যেটা পাপ্পুসকে একটা বাতাস প্রবেশযোগ্য প্যারাস্যুটের মতো কাজ করতে সাহায্য করে। কিন্তু, এটা যেকোনো প্যারাস্যুটের চেয়ে আরও বেশি কার্যকারী এবং টেকসই। এর চেয়েও বড়ো বিষয় হল, পাপ্পুসে ৯০ শতাংশ খালি জায়গা থাকে। তাই এটা ওজনে অনেক হালকা।
বিজ্ঞানিরা ড্যান্ডেলিয়ন বীজের ওড়ার ক্ষমতা নকল করার উপায় খুঁজছেন। একটা উপায় হল, তারা এই তথ্য ব্যবহার করে ছোটো ড্রোন তৈরি করতে পারে, যেটাতে খুব অল্প পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন অথবা অতিরিক্ত কোনো শক্তিরই প্রয়োজন হয় না আর এর ফলে শক্তির অপব্যবহার রোধ করা যায়। এই ধরনের ড্রোন বিশেষ বিশেষ কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন বাতাসের দূষণ মাত্রা পরিমাপ করা।
ড্যান্ডেলিয়ন বীজের ভেসে বেড়ানো দেখুন
আপনি কি মনে করেন? ড্যান্ডেলিয়ন বীজের ওড়ার এই বিশেষ ক্ষমতা কি বিবর্তনের মাধ্যমে এসেছে? না কি এটা সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট?