যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য
আমি কী খাব আর কী খাব না?
তুমি নিশ্চয়ই জান যে, চিন্তাভাবনা না করে কিছু খেলে স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। আমরা যদি অল্পবয়স থেকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে না তুলি, তা হলে হয়তো বড়ো হওয়ার পরও সেই ধরনের খাবার খেতে চাইব না। তাই, এখন থেকেই এই অভ্যাস গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ।
খাবার খাওয়ার এক ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার মানে কী?
বাইবেল বলে, আমাদের “নিজেদের দমন” করতে হবে আর এই বিষয়টা খাওয়া-দাওয়ার প্রতিও প্রযোজ্য। (১ তীমথিয় ৩:১১) এই নীতি মাথায় রাখো এবং এই কথাগুলো মনে রাখো …
খাবার খাওয়ার এক ভালো অভ্যাসের মধ্যে সব কিছু রয়েছে। সঠিক ধরনের খাবারদাবারে পাঁচটা বিষয় রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে দুধ-জাতীয় জিনিস, প্রোটিন (মাছ, মাংস, ডিম, ইত্যাদি), ফল ও শাকসবজি। অনেকে ওজন কমানোর জন্য এগুলোর মধ্য থেকে কিছু খাবার বাদ দিয়ে দেয়। এটা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে কারণ তাদের শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না।
এটা করে দেখো: বিভিন্ন ধরনের খাবারের উপকারিতা জানার জন্য তুমি গবেষণা করতে পারো অথবা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে পারো। যেমন:
কার্বোহাইড্রেট (শর্করা) থেকে তুমি শক্তি পাবে। প্রোটিন তোমাকে অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করবে। এটা টিস্যু (কলা) তৈরি করতে আর কোথাও কেটে গেলে সেটাকে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। সঠিক ধরনের এবং সঠিক মাত্রায় চর্বি-জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে হার্টের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে এবং তুমি নিজেকে সুস্থসবল মনে করবে।
“আমি সবসময় চেষ্টা করি যেন আমার খাবারের তালিকায় সমস্ত কিছু থাকে। আমার মনে হয় না, মাঝেমধ্যে মিষ্টি-জাতীয় খাবার অথবা ফাস্ট ফুড খাওয়া ভুল। কিন্তু, কেউ যদি শুধু এগুলোই খায়, তা হলে তা ঠিক নয়। তাই, আত্মসংযম করা গুরুত্বপূর্ণ।”—ব্রেন্ডা।
খাবার খাওয়ার এক ভালো অভ্যাসের মানে হল খারাপ অভ্যাস গড়ে না তোলা। যেমন, পেট ভোরে না খাওয়া অথবা প্রচুর পরিমাণে খাওয়া কিংবা খাওয়ার বিষয়ে সবসময় অতিরিক্ত সচেতন থাকা।
এটা করে দেখো: এক মাস ধরে তুমি যা যা খেয়েছ, সেটার একটা রেকর্ড রাখো। তুমি কি কখনো কখনো উপরে উল্লেখ করা ভুলগুলো করে ফেল? খাবার খাওয়ার এক ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য তোমাকে কোন রদবদল করতে হবে?
“কোনো কোনো দিন আমি অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতাম, আবার কোনো কোনো দিন কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতাম। পরে আমি ঠিক করি, ক্যালোরি গোনার পরিবর্তে আমি এই বিষয়টা মনে রাখব যে, আমি যেন অতিরিক্ত না খাই এবং পেট ভোরে গেলে খাওয়া থামিয়ে দিই। যদিও এক ভালো অভ্যাস গড়ে তুলতে সময় লেগেছিল, কিন্তু এখন আমি খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে খেয়াল রাখি।”—হেইলি।
কীভাবে আমি এই অভ্যাস বজায় রাখতে পারি?
আগে থেকে চিন্তা করো। বাইবেল বলে: “পরিশ্রমীর চিন্তা হইতে কেবল ধনলাভ হয়।” (হিতোপদেশ ২১:৫) খাবার খাওয়ার এক ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য আগে থেকে এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
“ভালো স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য কী খেতে হবে, তা আগে থেকে চিন্তা করে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এইরকম খাবার বাড়িতে রান্না করতে হয়। এরজন্য হয়তো অনেক পরিশ্রম করতে হয়, তবে এটা উপকারজনক এবং এতে অনেক টাকাপয়সা বাঁচে।”—থমাস।
ভালো খাবার খাওয়ার এক অভ্যাস গড়ে তোলো। বাইবেল বলে: “সূক্ষ্ম বুদ্ধি … রক্ষা কর।” (হিতোপদেশ ৩:২১) “সূক্ষ্ম বুদ্ধি” বা বিজ্ঞতার সঙ্গে কাজ করলে তুমি পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার বিভিন্ন উপায় খুঁজে বের করবে, যেগুলোর মাধ্যমে তুমি উপকৃত হবে।
“আমি প্রতিদিন একটা খাবারের জায়গায় আরেকটা খাবার খেতে শুরু করি, যেটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারজনক। যেমন, চকলেটের পরিবর্তে আপেল খেতে শুরু করি। ধীরে ধীরে আমি প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার খেতে শুরু করি।”—কিয়া।
নিজের কাছ থেকে অতিরিক্ত আশা কোরো না। বাইবেল বলে: “আনন্দপূর্ব্বক তোমার খাদ্য ভোজন কর।” (উপদেশক ৯:৭) খাবার খাওয়ার এক ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার মানে এই নয় যে, তুমি আনন্দের সঙ্গে খাবে না অথবা তুমি যা যা খাচ্ছ, সেগুলোর হিসাব রাখতে হবে। তুমি যদি তোমার ওজন কমাতে চাও, তা হলেও মনে রেখো, তোমার লক্ষ্য হল সুস্থসবল থাকা। তাই, নিজের কাছ থেকে অতিরিক্ত আশা কোরো না।
“সম্প্রতি আমি ১৪ কিলো ওজন কমাতে পেরেছি আর সেই সময়ে আমি কখনো খালি পেটে থাকিনি এবং কোনো কিছু খাওয়া একেবারে বন্ধও করিনি, তা সেটা মিষ্টিই হোক না কেন। আমি জানতাম, এর পিছনে অনেক সময় লাগবে এবং খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে আমার চিন্তাধারা পরিবর্তন করতে হবে।”—মেলানি।